bus service

ভাড়ার কাঁটায় অনিশ্চিত বেসরকারি বাস

মঙ্গলবার বেসরকারি বাসমালিকদের সংগঠনের কর্তারা ১ জুলাই থেকে বাস পরিষেবা সচল হওয়ার বিষয়ে আশার কথা শোনাতে পারেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২১ ০৭:৩০
Share:

সারিবদ্ধ: প্রায় দু’মাস বন্ধ থাকার পরে ১ জুলাই থেকে পরিষেবা শুরু হওয়ার অপেক্ষায় বেসরকারি বাস। মঙ্গলবার, ঢাকুরিয়া স্ট্যান্ডে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

কাল, বৃহস্পতিবার থেকে বাস চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে সরকারি পরিবহণ নিগমগুলি। তবে বেসরকারি বাস ও মিনিবাস নিয়ে জটিলতা এখনও অব্যাহত। যাত্রী তোলার প্রশ্নে রাজ্য সরকার ৫০ শতাংশের সীমা বেঁধে দিলেও ভাড়া নিয়ে কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি। কম যাত্রী নিয়ে কী ভাবে খরচ কুলিয়ে ওঠা যাবে, সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না বাসমালিকেরা। মঙ্গলবার বেসরকারি বাসমালিকদের সংগঠনের কর্তারা ১ জুলাই থেকে বাস পরিষেবা সচল হওয়ার বিষয়ে আশার কথা শোনাতে পারেননি। যদিও বাসের ভাড়া নির্ধারণের জন্য পরিবহণ দফতর যে তিন সদস্যের কমিটি তৈরি করেছে, সেখানে দৈনন্দিন আয়-ব্যয়ের হিসেব ছাড়াও ভাড়া নিয়ে নিজেদের মতামত জানানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাসমালিক সংগঠনগুলি। ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’, ‘বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ এবং ‘মিনিবাস অপারেটর্স কোঅর্ডিনেশন কমিটি’ এ বিষয়ে নিজেদের মতামত জানিয়েছে। ‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’ও দু’-এক দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে মতামত জানাবে বলে খবর। তবে, ভাড়া নির্ধারণের কমিটি তাদের মতামত জানানোর আগে কোন সূত্র মেনে আপাতত বাস চালানো হবে, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে সংশয়।

Advertisement

‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘পুরনো ভাড়ায় বাস চালানো সম্ভব নয়। নিজেদের মতো ভাড়া আদায় করতে গিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে সংঘাতেও যেতে চাই না। সরকার যত দিন না নতুন ভাড়া নির্ধারণ করছে, তত দিন সরকারি এগজিকিউটিভ শ্রেণির (ই-১) ভাড়ায় বাস চালানোর প্রস্তাব দিয়েছি।’’ ওই প্রস্তাব অনুযায়ী, ন্যূনতম ভাড়া হোক ১২ টাকা, তার পরে ১৫ এবং ১৬ টাকার দুটো পর্যায় থাকুক। ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’ ১২, ১৬ এবং ১৮ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়ার কথা জানিয়েছে। ‘বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ এবং ‘মিনিবাস অপারেটর্স কোঅর্ডিনেশন কমিটি’র তরফে প্রদীপনারায়ণ বসু ও স্বপন ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা কোনও ভাড়ার প্রস্তাব দিচ্ছি না। তবে পরিষেবা শুরু করার আগে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে চাই। যাতে অন্তর্বর্তী পরিস্থিতিতে একটা সুষ্ঠু সমাধান বার করা যায়।’’

‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষের আর্থিক ক্ষমতা কমেছে। বাসমালিকেরাও সঙ্কটে। ভাড়ার পুনর্বিন্যাসের পাশাপাশি আর্থিক প্যাকেজও প্রয়োজন।’’ ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’ লকডাউন পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্কের কিস্তি ও অন্যান্য বকেয়া মেটানোর জন্য বিনা সুদে সরকারের কাছে ঋণের দাবি জানিয়েছে।
এই অচলাবস্থার মধ্যে অটোর যথেচ্ছ ভাড়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ‘জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটস’-এর তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। অটো ইউনিয়নগুলি নিজেদের মতো করে ভাড়া ঠিক করলেও বাসের ভাড়া নিয়ে টালবাহানা চলার অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষকে অটোয় সেই বাড়তি ভাড়াই গুনতে হচ্ছে, অথচ বাসের ভাড়া নিয়ে সরকার নীরব।’’ ঘুরপথে খরচ বৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কায় সাধারণ যাত্রীরাও। ফলে, গণপরিবহণ সচল করার প্রশ্নে দ্রুত সরকারি হস্তক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছেন বাসমালিক সংগঠনের নেতৃত্ব।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement