CNG

CNG: সিএনজি পাইপলাইন বসাতেও জট

মঙ্গলবার সিএনজি সংক্রান্ত মামলায় এই জটিলতার কারণ জানতে চাইল জাতীয় পরিবেশ আদালত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২১ ০৬:১৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

ডিজ়েলচালিত ইঞ্জিনের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির (কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস, সিএনজি) উপযুক্ত ইঞ্জিনে বাস চালানো নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। বুধবারই বাসমালিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনায় বসেছিলেন পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। যেমন জট কাটেনি সিএনজি-র পাইপলাইন বসানো নিয়েও।

Advertisement

মঙ্গলবার সিএনজি সংক্রান্ত মামলায় এই জটিলতার কারণ জানতে চাইল জাতীয় পরিবেশ আদালত। কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক, ‘গেল (ইন্ডিয়া) লিমিটেড’ এবং কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক-সহ রাজ্যে সিএনজি পাইপলাই‌ন আনার প্রক্রিয়ায় যুক্ত সব পক্ষকে আগামী ৬ জানুয়ারির আগে নিজেদের অবস্থান জানাতে বলা হয়েছে।

পরিবেশ আদালতে সিএনজি মামলা চলছে ২০১৫ সাল থেকে। বছর তিনেক আগে জাতীয় পরিবেশ আদালত রাজ্যকে নির্দেশও দিয়েছিল, গণপরিবহণ ব্যবস্থাকে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির আওতায় আনার জন্য নির্দিষ্ট নীতি তৈরি করতে। যার অন্যতম কারণ, কলকাতা ও হাওড়ার ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণ। এর আগে ‘গেল (ইন্ডিয়া) লিমিটেড’ পরিবেশ আদালতে জমা দেওয়া রিপোর্টে বলেছিল, পাইপলাইন বসাতে জমি অধিগ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে তা ব্যবহারের অধিকার (রাইট অব ইউজ়ার বা আরওইউ) দেওয়ার নিয়ম থাকলেও রাজ্য সরকারের তরফে সেই প্রক্রিয়া অত্যন্ত ঢিমেতালে চলছে।

Advertisement

যার প্রেক্ষিতে সিএনজি পাইপলাইন প্রকল্প কোন অবস্থায়, তার জেলাভিত্তিক ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ গত ৮ নভেম্বর রাজ্য সরকার পরিবেশ আদালতের কাছে জমা দিয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, নদিয়া, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমানের ক্ষেত্রে পাইপলাইন বসাতে জমির আরওইউ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার সর্বোচ্চ মেয়াদ আগামী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু উত্তর ২৪ পরগনার ক্ষেত্রে কোনও সময়সীমাই উল্লেখ করা হয়নি। কারণ, সেখানে পাইপলাইন বসানোর নির্ধারিত গতিপথে কিছু নির্মাণ থাকায় বিকল্প পথের রূপরেখা তৈরির জন্য গেল-কে অনুরোধ করেছে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন। তবে সে বিষয়ে অচলাবস্থা কাটেনি। শুধু তা-ই নয়, রাজ্য সরকারের দাবি মতো, যে সমস্ত মৌজার জমি ইতিমধ্যেই হস্তান্তর করা হয়েছে, সেগুলির জন্য পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মিনারেল পাইপলাইন (অ্যাকুইজ়িশন অব রাইট অব ইউজ়ার ইন ল্যান্ড) আইন, ১৯৬২ অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি জারির কথা বলা হলেও কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক তা এখনও করে উঠতে পারেনি।

যার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক, গেল (ইন্ডিয়া) এবং কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রক-সহ সমস্ত পক্ষকে জাতীয় পরিবেশ আদালত আগামী ৬ জানুয়ারির মধ্যে নিজেদের বক্তব্য জানাতে বলেছে। এক পরিবেশবিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘এমনিতেই কলকাতা দেশের ডিজ়েল রাজধানী। সেখানে সিএনজি আনা নিয়ে যে টালবাহানা চলছে, তাতে এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়েই সংশয় রয়েছে।’’ অন্য এক পরিবেশবিদের কথায়, ‘‘জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের কথা বলা হয়েছে। এটা বাস্তব সমস্যা নিঃসন্দেহে।’’

পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত আবার জানান, রাজ্য সরকারের বক্তব্য মতো উত্তর ২৪ পরগনার ১৭টি মৌজায় পাইপলাইন বসানো অনিশ্চিত। কারণ, ওই সমস্ত মৌজা যথেষ্ট জনবহুল এবং ঘিঞ্জি। সুভাষবাবুর আক্ষেপ, ‘‘ফলে ডিজ়েলের কারণে যতই ধোঁয়া-দূষণ হোক, তা থেকে মুক্তির কোনও রকম আশা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন