১টি বিকল, মেয়াদ শেষ ৪টির, দেড় লক্ষ যাত্রী নিয়ে ধুঁকছে এসক্যালেটর

শুধু দমদম নয়, বেলগাছিয়া, চাঁদনি চক, এসপ্লানেড, রবীন্দ্র সদন, নেতাজি ভবন, কালীঘাট এবং রবীন্দ্র সরোবর স্টেশনেও একাধিক এসক্যালেটরের মেয়াদ ফুরিয়েছে।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:২৭
Share:

মেট্রো স্টেশনগুলিতে প্রায়ই বন্ধ থাকে চলমান সিঁড়ি। ফাইল চিত্র

দিনে দেড় লক্ষেরও বেশি যাত্রী যাতায়াত করেন দমদম মেট্রো স্টেশন দিয়ে। অথচ, ওই স্টেশনের পাঁচটি এসক্যালেটরের একটি গত মে মাস থেকেই বিকল। মেয়াদ ফুরিয়েছে বাকি চারটিরও।

Advertisement

শুধু দমদম নয়, বেলগাছিয়া, চাঁদনি চক, এসপ্লানেড, রবীন্দ্র সদন, নেতাজি ভবন, কালীঘাট এবং রবীন্দ্র সরোবর স্টেশনেও একাধিক এসক্যালেটরের মেয়াদ ফুরিয়েছে। কার্যত মেট্রোর নড়বড়ে নন-এসি রেকের মতোই দশা ওই সমস্ত চলমান সিঁড়ির। মেট্রো সূত্রের খবর, ২৪টি স্টেশনের মোট ৭৮টি এসক্যালেটরের মধ্যে অন্তত ২৫টির মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। ওই এসক্যালেটরগুলির স্বাভাবিক আয়ু ২০ বছর। যা ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু তার পরেও নানা কারণে নতুন এসক্যালেটর বসানোর টেন্ডার-প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হয়েছে। তাই ঝুঁকি নিয়ে পুরনোগুলিকে দিয়েই কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে ভিড়ের চাপে আচমকা এসক্যালেটর বিগড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা যেমন বাড়ছে, তেমনই রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অনেক বেশি সময়ও লেগে যাচ্ছে।

মেট্রোর যে সমস্ত এসক্যালেটর তুলনায় নতুন, সেগুলি বছরে এক বার ‘পিরিয়ডিক ওভারহলিং’ বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য খুলে ঝাড়পোঁছ করা হয়। পুরনোগুলির ক্ষেত্রে ওই কাজই বছরে দু’বার, অর্থাৎ ছ’মাস অন্তর করতে হয়। যার অর্থ, সারা বছরই মেট্রোর কোনও না কোনও স্টেশনে এসক্যালেটরের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলে। মেট্রোর কর্মীরা জানিয়েছেন, এক-একটি এসক্যালেটর খুলে পুরোদস্তুর সাফাই করে সারাতে গড়ে ১০ দিন করে সময় লাগে।

Advertisement

মাটির উপরের স্টেশনগুলির তুলনায় ভূগর্ভস্থ স্টেশনগুলিতে এসক্যালেটরের ব্যবহার হয় বেশি। আবার ওই স্টেশনগুলিতেই এসক্যালেটরের বয়স বেশি হওয়ায় রক্ষণাবেক্ষণও করতে হয় ঘনঘন। কিন্তু পুরনো এসক্যালেটরগুলিকে মেট্রো কর্তৃপক্ষ বয়ে চলেছেন কেন?

মেট্রোর কর্তাদের দাবি, রেলের তরফে এসক্যালেটর বদলের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের বরাদ্দ রেল বাজেটে করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি পদ্ধতি-প্রকরণ মেনে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে সময় লাগে। সেই কারণেই বেশ কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।

কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের কাজেই বা এত সময় লাগে কেন? তার পিছনেও সরকারি প্রক্রিয়াকেই দুষছেন মেট্রোকর্তাদের একাংশ। রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রেও বরাত দেওয়ার নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। বিভিন্ন স্টেশনে একাধিক সংস্থার এসক্যালেটর থাকলেও মেরামতির বরাত দেওয়ার সময়ে একসঙ্গে কয়েকটি স্টেশনের ভার দেওয়া হয় কোনও একটি সংস্থাকে। ফলে বহু ক্ষেত্রেই এক সংস্থার এসক্যালেটর মেরামতির ভার পায় অন্য সংস্থা। যার জেরে এসক্যালেটরের আসল যন্ত্রাংশ পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়। মেট্রোকর্তাদের একাংশের অবশ্য দাবি, যন্ত্রাংশ তেমন সমস্যা নয়। বরং কম খরচে যোগ্য সংস্থা বাছাই করাটাই গুরুত্বপূর্ণ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে মেট্রো রেলের এক কর্তা বলেন,“দমদম স্টেশনের সব ক’টি এসক্যালেটরই বদলে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত পাঁচ মাস ধরে বিকল হয়ে থাকা এসক্যালেটরটি আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বদলে ফেলা হবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে মেয়াদ ফুরনো এসক্যালেটরগুলি বদলের কাজ সম্পূর্ণ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন