ধৃত এক সিভিক ভলান্টিয়ার। — নিজস্ব চিত্র।
দাবি মতো টাকা না দেওয়ায় মাছ ব্যবসায়ীদের মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তিন জন সিভিক ভলান্টিয়ার মাছ ব্যবসায়ীদের মারধর করে টাকাও কেড়ে নিয়েছেন। শুক্রবার ভোরবেলা ঘটনাটি ঘটেছে বাগুইআটিতে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ পেয়ে তিন সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার সূত্রপাত এ দিন ভোর চারটে নাগাদ। বাগুইআটি থানা এলাকার অর্জুনপুরের কয়েক জন মাছ ব্যবসায়ী মিনি ট্রাকে করে মাছ আনতে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, থানা থেকে কিছুটা দূরে রঘুনাথপুরে রাজারহাট-গোপালপুরের পুরনো পুরভবনের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল তিন যুবক। তাঁরা ট্রাকটি দাঁড় করিয়ে তাতে উঠতে চান। সুকুমার রাজবংশী নামে এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, “আমরা বাধা দিলে ওই যুবকরা নিজেদের সিভিক ভলান্টিয়ার বলে পরিচয় দেয় এবং নিজেদের পরিচয়পত্র দেখায়। ওদেরকে বাগুইআটি ট্রাফিক গার্ডের কাছে নামিয়ে দিতে বলে উঠতে চায়।”
মাছ ব্যবসায়ীরা বাগুইআটি থানাতে যে অভিযোগ জানান। সেখানে তাঁরা লিখেছেন, ওই যুবকদের তাঁরা বলেন, বাগুইআটি ট্রাফিক গার্ডের দিকে যাবেন না। এর পরেই ওই সিভিক ভলান্টিয়াররা টাকা চায় বলে অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে। প্রতিবাদ করলে তিন জনের এক জন মাছ ব্যাবসায়ীদের উদ্দেশে গালিগালাজ শুরু করেন। সুকুমার রাজবংশীর অভিযোগ, “কেন গালিগালাজ করা হচ্ছে প্রশ্ন করায় ওই তিন যুবক আমাদের মারধর শুরু করে। রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়।”
অভিযোগ, এক সিভিক ভলান্টিয়ার মত্ত অবস্থায় ছিল। ওই ধস্তাধস্তির মধ্যেই মাথা ফাটে সুকুমার রাজবংশীর। এর পরেই থানায় যান ওই ব্যবসায়ীরা। তাঁরা অভিযোগ জানান যে, তাঁদের সঙ্গে থাকা ২০ হাজার টাকাও ছিনতাই করে নিয়েছেন ওই সিভিক ভলান্টিয়াররা। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ খোঁজ শুরু করে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারদের। অভিযুক্তদের চিহ্নিতও করেন তদন্তকারীরা। এ দিন সকালেই গ্রেফতার করা হয় তিন জনকে।
আরও পড়ুন: মেট্রো স্টেশনে তরুণীকে হেনস্থার অভিযোগ
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই বাগুইআটি ট্রাফিক গার্ডের সঙ্গে যুক্ত। ওই তিন অভিযুক্ত— রাজীব চৌধুরী, রাজু ঘোষ এবং অভিষেক মণ্ডল ডিউতে ছিল না। গোটা বিষয়টি বাগুইআটি থানার পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদেরও জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: দলবদলের সঙ্গে ভোলবদলও হল অর্জুনের
সুকুমার-সহ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এক শ্রেণির সিভিক ভলান্টিয়ার রীতিমতো তোলাবাজি চালাচ্ছে ব্যবসায়ীদের উপর। বিধাননগর কমিশনারেটের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, “ধৃতদের বারাসত আদালতে তোলা হবে। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১, ৩২৩, ৩২৪ ( মারধর, জোর করে আটকানো) এবং ৩৭৯ (ছিনতাই) ধারায় মামলা করা হয়েছে।”
(শহরের সেরা খবর, শহরের ব্রেকিং নিউজ জানতে এবং নিজেদের আপডেটেড রাখতে আমাদের কলকাতা বিভাগ পড়ুন।)