Covid Death

তলানিতে আয়, বেসরকারি বাস জীবাণুমুক্ত করার কাজ বন্ধ

জীবাণুমুক্ত করার অতিরিক্ত খরচের দায় নিতে নারাজ বাসমালিকেরা।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

লাগামছাড়া সংক্রমণের মধ্যেই বাধ্য হয়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বেসরকারি বাসে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা। তাঁদের অনেকেরই অভিযোগ, কন্ডাক্টর, চালক এবং যাত্রীদের মাস্ক পরা নিয়ে রাস্তায় পুলিশি কড়াকড়ি বাড়লেও বেসরকারি বাস জীবাণুমুক্ত করার কাজ বর্তমানে প্রায় শিকেয় উঠেছে। এবং তা নিয়ে প্রশাসনিক নজরদারিও কার্যত নেই বললেই চলে। গত বছরের আনলক-পর্বে করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়ে বেসরকারি বাস জীবাণুমুক্ত করার যেটুকু উদ্যোগ চোখে পড়েছিল, এ বার তা সম্পূর্ণ উধাও।

Advertisement

এ বছর সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ লাগামছাড়া হারে বাড়তে থাকায় রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর করোনা-বিধি কঠোর ভাবে বলবৎ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে পুলিশকে। এর মধ্যেই কলকাতা লাগোয়া কয়েকটি জেলার পরিবহণ আধিকারিকেরা বেসরকারি বাসের মালিকদের বাস জীবাণুমুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। যা শোনার পরে বাসমালিক সংগঠনগুলির বক্তব্য, গত বছরের আনলক-পর্বে পরিবহণ দফতরের ব্যবস্থাপনায় বেসরকারি বাস জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছিল। পরিবহণ দফতর বাসচালক ও কন্ডাক্টরদের গ্লাভস এবং স্যানিটাইজ়ারও সরবরাহ করেছিল। কিন্তু এ বছর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার অনেক আগেই ডিজেলের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। বাসের যাত্রী-সংখ্যাও কমতে শুরু করেছে। এই অবস্থায় সরকারি সাহায্য ছাড়া বাস জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছে তারা।

এসপ্লানেড এবং বাবুঘাট থেকে যে সমস্ত আন্তঃরাজ্য বাস চলে, বর্তমানে তার বেশির ভাগই বসে গিয়েছে যাত্রী না হওয়ায়। বিভিন্ন রাজ্যে কোভিড সংক্রান্ত নানা রকম বিধিনিষেধ আরোপ হওয়ায় একাধিক রাজ্যে ঢুকতে পারছে না এ রাজ্য থেকে যাওয়া বাস। দূরপাল্লার আন্তঃজেলা রুটে যে সব বাস চলে, সেগুলিতেও যাত্রী কমছে হু হু করে। ফলে, ওই সব বাসও এখন রাস্তায় কম নামছে। কলকাতা এবং শহরতলির বিভিন্ন রুটে এখন দুপুরের পর থেকেই বাসের সংখ্যা কমে আসছে। সেই কারণে যে অল্পসংখ্যক বাস চলছে, তাতে যাত্রীদের ভিড় উপচে পড়ছে। নাগাড়ে লোকাল ট্রেন বাতিলের জেরেও বাসের উপরে চাপ কিছুটা বেড়েছে। এই অবস্থায় বাস জীবাণুমুক্ত করার অতিরিক্ত খরচের দায় নিতে নারাজ বাসমালিকেরা।

Advertisement

‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা সমস্যার কথা পরিবহণ সচিবকে চিঠি লিখে জানিয়েছি। সরকারি সাহায্য ছাড়া নিজেরা খরচ করে ওই কাজ করা সম্ভব নয়। ডিজেলের দাম এবং বিভিন্ন টোল প্লাজার খরচ বৃদ্ধির কারণে বাসমালিকেরা আর্থিক ভাবে সমস্যায় রয়েছেন।’’

‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘অতীতে যে ভাবে পরিবহণ দফতর এগিয়ে এসে সাহায্য করেছিল, এ বারও সেই উদ্যোগ প্রয়োজন। আমরা বাসের সাধারণ পরিচ্ছন্নতার উপরে জোর দিচ্ছি। কিন্তু, আমাদের কাছে বাস নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করার পরিকাঠামো নেই।’’ রাজ্য পরিবহণ দফতরের কর্তারা এ নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁদের দাবি, করোনা আবহে দু’-একটি জেলার আধিকারিকেরা ওই নির্দেশ দিয়েছেন। এ নিয়ে এখনও বাধ্যতামূলক কিছু করা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন