ভাঙচুর হওয়া ওয়ার্ড অফিস। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।
খাস কলকাতার বুকে আক্রান্ত তৃণমূল কাউন্সিলের দফতর। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইকবাল আহমেদের অফিসে ভরদুপুরে হামলা হল শুক্রবার। হামলা চালানোর অভিযোগ যার বিরুদ্ধে, সেই পাপ্পু তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পালের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ভোট মিটতেই তৃণমূলের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবি নিঃসন্দেহে অস্বস্তি বাড়িয়েছে শাসক দলের। ইকবাল প্রকাশ্যে পাপ্পুর বিরুদ্ধে মুখও খুলেছেন। কিন্তু তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
যে ওয়ার্ড অফিসে শুক্রবার দুপুরে হামলা হয়েছে, সেটি রাজবাজার এলাকার রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিটে। ইকবাল ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, দুপুর বারোটা নাগাদ ৭-৮ জন দুষ্কৃতী হাতে বন্দুক, লাঠি, হকি স্টিক নিয়ে ওয়ার্ড অফিসে হামলা চালায়। দুষ্কৃতীরা বন্দুকের বাঁট দিয়ে মহম্মদ ইমরান নামে এক তৃণমূল কর্মীর চোখে আঘাত করেন। ইমরান কাউন্সিলর ইকবাল আহমেদের ভাইপো। আরও দুই তৃণমূল কর্মীকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। গুরুতর আহত মহম্মদ ইমরানকে প্রথমে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওয়ার্ড অফিস থেকে থানার দূরত্ব মাত্র দুশো গজ হলেও ভাঙচুরের ঘটনার পর পুলিশের আসতে দেরি হওয়ায় এ দিন কাউন্সিলরের নেতৃত্বে তৃণমূল সমর্থকরা নারকেলডাঙা থানার সামনে প্রায় আধ ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখান। থানায় ডেপুটেশন দেওয়া হয়। কাউন্সিলরের অভিযোগ, পুলিশ মদত দেওয়ায় সমাজবিরোধীরা এলাকায় দাপিয়ে বেআইনি কাজ করছে।
ওয়ার্ড অফিসে ভাঙচুরের পর তৃণমূলের ঘরোয়া কোন্দল আর চাপা থাকেনি। ইকবাল আহমেদ কোনও রাখঢাক না করে পরেশ পালের দিকে আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘পাপ্পু এলাকার দাগী দুষ্কৃতী। বিধানসভা ভোটের প্রচারে পাপ্পু পরেশ পালের সঙ্গে ছিল।’’ ইকবালের আরও অভিযোগ, পাপ্পুর নেতৃত্বে ক্যানেল ওয়েস্ট রোডে একটি তিনতলা বেআইনি বাড়ি তৈরি শুরু হয়েছে বছর দুয়েক আগে। ইকবালের বাধায় ওই নির্মাণ কাজ দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়ির নির্মাণ কাজ ফের শুরু হয়। কাউন্সিলর খবর পেয়ে পুলিশকে রাতেই জানান। পুলিশ গিয়ে আবার কাজ বন্ধ করে দেয়। তৃণমূল কাউন্সিলর বললেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করে দিয়েছি বলেই পাপ্পুর নেতৃত্বে দুষ্কৃতীরা ওয়ার্ড অফিসে হামলা চালাল। পাপ্পু ছাড়াও ছিল কাক্কু আব্বাস, রবি, হাতি রাজা, টিকু আর আশরফ।’’