মাটি সরাতে নিজেই উদ্যোগী কাউন্সিলর

জমি দখল করার জন্য স্থানীয় একটি ক্লাব মেট্রোর মাটি কিনে হাওড়ার কামারডাঙা রোডের পাশে হাওড়া ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট বা এইচআইটির জমিতে ফেলায় পাশের তিনটি কারখানা ও একটি বাড়িতে ঢোকার পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৭ ০২:০৭
Share:

কাউন্সিলরের উদ্যোগে মাটি কাটা চলছে। মঙ্গলবার, হাওড়ার কামারডাঙায়। —নিজস্ব চিত্র।

অবশেষে নিজেই টাকা খরচ করে মাটি সরাতে উদ্যোগী হলেন এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর সুব্রত পোল্লে। যদিও তা হল একটি প্রাণের বিনিময়ে। জমি দখল করার জন্য স্থানীয় একটি ক্লাব মেট্রোর মাটি কিনে হাওড়ার কামারডাঙা রোডের পাশে হাওড়া ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট বা এইচআইটির জমিতে ফেলায় পাশের তিনটি কারখানা ও একটি বাড়িতে ঢোকার পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কারখানা বন্ধ হওয়ায় আর্থিক সঙ্কটে পড়ে ২৩ সেপ্টেম্বর ওই মাটির উপর দাঁড়িয়ে কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন লাগান মালিক তপন মণ্ডল। চলতি মাসের ৮ তারিখে হাওড়া জেলা হাসপাতালে মারা যান তিনি।

Advertisement

এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দা এবং মৃতের পরিজনেরা মৃতদেহবাহী গাড়ি দিয়ে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখান। পরে তপনবাবুর পরিবারের তরফে স্থানীয় কাউন্সিলর ও তাঁর সহকারী অভিযুক্ত ক্লাবের আট জনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়।

মঙ্গলবার পে-লোডার ও ডাম্পার ভাড়া করে পুলিশি পাহারায় ওই মাটি তোলা শুরু করেন সুব্রতবাবু। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘কাউন্সিলর হিসেবে একটা দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাই নিজেই টাকা খরচ করে মাটি সরানোর ব্যবস্থা করেছি।’’ তপনবাবুর পরিবারের তরফে অভিযোগ, মাটি ফেলা নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর, পুলিশ ও পুর আধিকারিকদের বারবার অভিযোগ করেও লাভ হয়নি।

Advertisement

এ দিন অভিযুক্ত কাউন্সিলরকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ওই পরিবারের কাছে এ জন্যে ক্ষমা চেয়ে এসেছি। জানতাম না এমন কিছু ঘটতে পারে। পরিবার থেকেও মাটি সরানো নিয়ে প্রথমে এত চাপ দেওয়া হয়নি। এখন থেকে সর্তক থাকব।’’

বাড়ি ও কারখানার সামনে থেকে মাটি সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দেখা দিলেও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার বিষয়টি মানতে পারছেন না মৃতের পরিবার। তপনবাবুর মেয়ে অন্তরা মণ্ডল বলেন, ‘‘কাউন্সিলর বাড়িতে এসে ক্ষমা চেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু একটা মানুষকে খুন করে ক্ষমা চেয়ে কী লাভ? অভিযুক্তদের এক জনকেও পুলিশ আজ পর্যন্ত গ্রেফতার করল না।’’ হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তার বক্তব্য, আইন আইনের পথে চলবে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন