Suicide

মেঝেয় স্ত্রীর দেহ, একই কাপড়ে ফাঁস স্বামীরও

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, একই কাপড় ব্যবহার করে গলায় ফাঁস দিয়েছেন ওই দম্পতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২০ ০৩:১৫
Share:

প্রতীকী ছবি

ছেলের খোঁজ নিতে বাড়িওয়ালাকে ফোন করেছিলেন উৎকণ্ঠিত বাবা। ছেলের সঙ্গে এক বার কথা বলিয়ে দেওয়ার জন্য কাতর অনুরোধ করেন তিনি। সেই মতো ছেলেকে ডাকতে যান বাড়িওয়ালার ছেলে। কিন্তু বারবার ডেকেও সাড়া না পেয়ে শেষে পাঁচিল বেয়ে উঠে জানলা দিয়ে দেখেন, গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছেন ওই যুবক। আর গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, একই কাপড় ব্যবহার করে গলায় ফাঁস দিয়েছেন ওই দম্পতি।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে বেলুড়ে এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, মৃত দম্পতির নাম নরোত্তম সিংহ (৩০) এবং সন্ধ্যা সিংহ (২৮)। কাপড়ের কারখানার কর্মী নরোত্তম বেলুড়ের আশুতোষ মুখার্জি রোডের একটি তিনতলা বাড়ির দোতলায় সস্ত্রীক ভাড়া থাকতেন। একই সঙ্গে থাকতেন নরোত্তমের বাবা-মাও। পুলিশ জানিয়েছে, কয়েক দিন আগে ওই যুবকের ঠাকুরমা মারা যাওয়ায় উত্তরপ্রদেশের বাড়িতে গিয়েছিলেন তাঁর বাবা-মা। কয়েক দিন পরে স্ত্রীকে নিয়ে দেশের বাড়িতে যাওয়ার জন্য কারখানা থেকে ছুটিও নিয়েছিলেন নরোত্তম।

ওই বাড়িওয়ালার ছেলে বাপি দেবনাথ পুলিশকে জানিয়েছেন, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ নরোত্তমের বাবা মদনবাবু ফোন করে ছেলের সঙ্গে কথা বলতে চান। বাপি বলেন, ‘‘নরোত্তমের ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে ধাক্কা দিলেও সাড়া পাইনি। পরে পাঁচিল বেয়ে উঠে দোতলার ঘরের জানলা খুলতেই দেখি ওই অবস্থা।’’

Advertisement

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দরজা ভেঙে বেলুড় থানার পুলিশ ঢুকে দেখে, ঘরের মেঝেতে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় পড়ে রয়েছেন সন্ধ্যা। তাঁর পায়ের কাছে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে নরোত্তমের দেহ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, গলায় কাপড়ের ফাঁস লাগিয়ে প্রথমে আত্মঘাতী হন সন্ধ্যা। কাপড় কেটে তাঁকে নীচে নামান নরোত্তম। এর পরে সেই কাপড়ে ফাঁস দিয়েই আত্মঘাতী হন তিনি। তবে ঠিক কী কারণে ওই দম্পতি এমন ঘটনা ঘটালেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোটও মেলেনি।

গত এক বছর ধরে ওই বাড়িতে সপরিবার ভাড়া থাকতেন নরোত্তম। তাঁর সহকর্মী তথা প্রতিবেশী মিথিলেশ সিংহ বলেন, ‘‘ওঁদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি হয়েছে বলে শুনিনি। পাঁচ দিন ধরে কারখানা থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতেই ছিলেন নরোত্তম।’’ ঘর থেকে ওই যুবকের মোবাইল ফোনটি ভাঙা অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে সন্ধ্যার মোবাইল অক্ষত রয়েছে। সেটি পরীক্ষা করে তদন্তকারীরা দেখেছেন, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ স্ত্রীর মোবাইল থেকেই দেশের বাড়িতে মাকে ফোন করেছিলেন নরোত্তম। এর পরেই বাপিকে ফোন করে ছেলের খোঁজ করেন তাঁর বাবা। ফোনে মায়ের সঙ্গে নরোত্তমের কী কথা হয়েছিল, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন