ব্যাঙ্কে গিয়ে গুলিতে জখম, ক্ষতিপূরণের নির্দেশ কোর্টের

যদিও সপ্তাহ খানেক আগে ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জাতীয় ক্রেতা আদালতে আবেদন করেছে ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৪৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে গিয়ে নিরাপত্তারক্ষীর বন্দুক থেকে আচমকা গুলি ছিটকে জখম হয়েছিলেন চাঁপদানির একই পরিবারের দু’জন। ২০১৩ সালের ওই ঘটনায় কলকাতার একটি নার্সিংহোমে প্রায় এক মাস ভর্তি থাকতে হয়েছিল আহতদের। ঘটনার পরে ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা না পেয়ে ২০১৫ সালে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে আবেদন করেন গুলিবিদ্ধেরা। গত ১২ অক্টোবর রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত নির্দেশ দিয়েছে, ৪০ দিনের মধ্যে আবেদনকারীদের ক্ষতিপূরণ-সহ প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে।

Advertisement

যদিও সপ্তাহ খানেক আগে ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জাতীয় ক্রেতা আদালতে আবেদন করেছে ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। ওই ব্যাঙ্কের সদর দফতরের সিনিয়র ম্যানেজার রবীন্দ্র বাগ বলেন, ‘‘ক্ষতিপূরণের টাকা আমরা অবশ্যই দেব। তবে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায় অনুযায়ী টাকার অঙ্কটা বেশি হওয়ায় সপ্তাহ খানেক আগে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে পাল্টা আবেদন করেছি।’’

ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, হুগলির চাঁপদানির বাসিন্দা কামরুন্নিসা ও তাঁর দেওর ওয়াসিম আখতার আনসারি ২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার চাঁপদানি শাখায় টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। ওয়াসিম বলছেন, ‘‘সে দিন ব্যাঙ্কের ভিতরে আসনে আমি ও বৌদি পাশাপাশি বসেছিলাম। প্রায় ১৫ ফুট দূরে একটি চেয়ারে বসে ঘুমোচ্ছিলেন এক নিরাপত্তারক্ষী। হঠাৎই তাঁর হাত থেকে বন্দুকটি মেঝেতে পড়ে যায়। তড়িঘড়ি বন্দুকটি তুলতে গিয়ে ট্রিগারে তাঁর আঙুল চলে যায়। পরপর গুলি ছিটকে আমার ও বৌদির পায়ে লাগে।’’

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, এর পরে অ্যাম্বুল্যান্সে করে গুলিবিদ্ধ ওই দু’জনকে প্রথমে চন্দননগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ও পরে হুগলির ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের কলকাতায় পাঠানো হয়। সেখানে একটি নার্সিংহোমে প্রায় এক মাস ভর্তি থাকতে হয় তাঁদের। লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। তখন ওই ব্যাঙ্কের থেকে ক্ষতিপূরণের আবেদন করেন আহতেরা। ওয়াসিমের অভিযোগ, ‘‘নিরাপত্তারক্ষীর ভুলে আমি ও বৌদি এখনও স্বাভাবিক ভাবে হাঁটাচলা করতে পারি না। অথচ ঘটনার পরে ব্যাঙ্কের কাছে ক্ষতিপূরণের জন্য বারবার গেলেও তারা কর্ণপাত করেনি।’’ অবশেষে ২০১৫ সালে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যান তাঁরা।

গত ১২ অক্টোবর রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বিচারক শ্যামল গুপ্ত ও উৎপলকুমার ভট্টাচার্য এই ঘটনায় ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘নিরাপত্তারক্ষীর হাত থেকে দুর্ঘটনাবশত গুলি ছিটকে গেলেও সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই গ্রাহকের পাশে দাঁড়ানো উচিত। এ ক্ষেত্রে অভিযোগকারীদের টাকা না দেওয়াটা দুভার্গ্যজনক।’’ চাঁপদানির ওই ব্যাঙ্ককে এই রায় ঘোষণার ৪০ দিনের মধ্যে আবেদনকারীদের প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ওই আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন