প্রতীকী ছবি
প্রথমে হাসপাতাল থেকে সহযোগিতা মেলেনি বলে অভিযোগ। তার পরে পুরসভার কন্ট্রোল রুমে ফোন করেও ঠিকঠাক উত্তর পাননি। তাই কোভিড পজ়িটিভ রিপোর্ট হাতে সটান পুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে হাজির এক যুবক। আর তা জেনেই ভয়ে দৌড় লাগালেন জনা চল্লিশেক রোগী ও পুরকর্মীরাও। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে কামারহাটি পুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি খোলা হলেও তার সামনে যেখানে থুতু ফেলেছিলেন ওই করোনা রোগী, সেই দু’টি জায়গা ড্রাম দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন কর্মীরা।
কী ঘটেছিল?
কামারহাটির বাসিন্দা, বছর চব্বিশের ওই যুবক কয়েক দিন আগে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন। সোমবার সকালে রিপোর্ট পেয়ে প্রথমে সাগর দত্ত হাসপাতালে যান তিনি। অভিযোগ, ওই যুবককে জানানো হয়, পুরসভা মারফত খবর না এলে ভর্তি নেওয়া হবে না। এর পরেই ওই যুবক পুর কন্ট্রোল রুমে ফোন করে জানান, তাঁর শরীর ভাল লাগছে না। তাঁর দাবি, তা শুনে পুরকর্মীরা তাঁকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেন। সেই মতো তিনি স্ত্রীকে নিয়ে সোজা চলে আসেন ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। কামারহাটি পুরসভার পিছনেই ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্র। সেই সময়ে সেখানে অন্য রোগী ও কর্মীরা সকলেই উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একটি বৈঠকও ছিল। পুরকর্মীরা জানান, ওই যুবক চিকিৎসকের সামনে গিয়ে জানান, তাঁর জ্বর জ্বর লাগছে। এর পরেই পকেট থেকে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট বার করে সেটি চিকিৎসককে ভাল করে দেখে দেওয়ারও অনুরোধ করেন।
কাগজটি হাতে নিয়েই হকচকিয়ে যান চিকিৎসক। কারণ, তাতে লেখা ওই যুবক পজ়িটিভ। নিজে করোনা-আক্রান্ত জানার পরেও কেন তিনি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসেছেন, ওই যুবককে তা জিজ্ঞাসা করেন চিকিৎসক। চিকিৎসকের ওই কথা শুনেই সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রোগী ও কর্মীরা দৌড়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে পালিয়ে যান। ওই চিকিৎসকও পিপিই পরে ছিলেন না। কোনও উপসর্গ না থাকায় চিকিৎসক ওই যুবককে বাড়ি চলে যেতে বলেন। তাঁকে হোম-কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) তথা পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য বিমল সাহা বলেন, ‘‘ঘটনার পরে স্বাস্থ্য কেন্দ্র-সহ গোটা চত্বর জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। ওই যুবক বা তাঁর স্ত্রীর খুব কাছাকাছি কারা এসেছিলেন, তা চিহ্নিত করা হচ্ছে।’’ সাগর দত্তের সুপার পলাশ দাস বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। তবে ঠিক কী ঘটেছিল, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’