জেএনইউ-এর ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতায় একসঙ্গে পথে নামল কংগ্রেস-বাম।—নিজস্ব চিত্র।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এর ঘটনাকে সামনে রেখে কলকাতায় একসঙ্গে পথে নামল কংগ্রেস ও বামেরা।
জেএনইউ-এর ঘটনার পরে প্রতিবাদীদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি এবং আরএসএস। সোমবারেও কলকাতায় বাম-কংগ্রেসের ওই মিছিল দেখে রাজ্য মুখপাত্র কৃশানু মিত্র মন্তব্য করেছেন, ‘‘হাফিজ সইদ (লস্কর প্রধান)-এর এত অনুগামী সিমিএম এবং কংগ্রেসে আছে এটা আগে জানা ছিল না। বিজেপি গোটা বিষয়টিকে জাতীয়তাবাদের মোড়কে পেশ করতে চাওয়ায় কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘যে আরএসএস গাঁধীজিকে হত্যা করেছিল, তাদের কাছ থেকে দেশপ্রেম শিখতে হবে?’’ ঠিক একই সুরে এ দিন মিছিল থেকে ধর্মতলায় সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘স্বাধীনতা সংগ্রামে সঙ্ঘ পরিবারের কারও সংযোগের ঘটনা ইতিহাসে দূরবীন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যায় না। মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীকে যারা খুন করেছিল, তাদের কাছ থেকে দেশপ্রেমের সার্টিফিকেটের দরকার নেই আমাদের।’’
বাক্স্বাধীনতার কণ্ঠরোধ এবং স্বৈরাচারী শাসনের প্রতিবাদে এ দিন কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত এই মিছিলে পা মেলালেন প্রদেশ কংগ্রেসের দুই প্রাক্তন সভাপতি সোমেন মিত্র ও প্রদীপ ভট্টাচার্য, দলের বর্ষীয়ান নেতা আব্দুল মান্নান, অরুণাভ ঘোষ এবং ওমপ্রকাশ মিশ্র। তাঁদের পাশাপাশি প্রতিবাদ মিছিলে ছিলেন, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী, সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, সিপিআই নেতা মঞ্জুকুমার মজুমদার এবং প্রবীর দেব, ফরোয়ার্ড ব্লকের নরেন চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। বিশিষ্ট মুখ হিসেবে মিছিলে দেখা গিয়েছে নাট্য ব্যক্তিক্ত কৌশিক সেনকেও।
মূলত নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে এই মিছিল হলেও কংগ্রেস এবং বাম নেতারা পথে নেমে প্রশ্ন তুলেছেন, দিল্লিতে এমন মারাত্মক ঘটনার পরেও তৃণমূল চুপ কেন? কংগ্রেস নেতা মান্নান বলেন, ‘‘হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের আত্মহত্যার পরে তৃণমূল সেখানে ছুটে গিয়েছিল। অথচ জেএনইউ-তে এত বড় ঘটনার পরেও তাদের মুখে কোনও প্রতিবাদ নেই। আসলে দুটোই স্বৈরাচারি সরকার। এদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ জারি থাকবে।’’
জেএনইউ-কাণ্ডে তৃণমূল কেন নীরব, সেই প্রশ্ন তোলেন বাম নেতারাও। বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাম-কংগ্রেস জোট চর্চার আবহে সোমবারের মিছিল নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সিপিএমের সুজনবাবু মন্তব্য করেছেন, ‘‘ভয়ঙ্কর ঘটনার প্রতিবাদের জন্য এক মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল, সেখানে যে কেউই যোগ দিতে পারতেন। তবে জোট যদি বলেন, তা হলে আমরা বলব মানুষের জোট হয়ে গিয়েছে।’’