বন্ধ বহু লোকাল ট্রেন, সতর্ক নজর মেট্রো রেলেও

ঝড়ের আশঙ্কায় শুক্রবার রাত পর্যন্ত কলকাতা মেট্রোয় কোনও ট্রেন বাতিল করা না হলেও পরিস্থিতির উপরে কড়া নজর রাখা হচ্ছে বলে মেট্রো সূত্রের খবর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৯ ০১:১৫
Share:

প্রশ্ন: রেলের অনুসন্ধান কেন্দ্রের সামনে ভিড়। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

ওড়িশায় ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র তাণ্ডবের ভয়াবহতা চিন্তায় ফেলল রেলের কর্তাদের।

Advertisement

ঝড়ের আশঙ্কায় শুক্রবার রাত পর্যন্ত কলকাতা মেট্রোয় কোনও ট্রেন বাতিল করা না হলেও পরিস্থিতির উপরে কড়া নজর রাখা হচ্ছে বলে মেট্রো সূত্রের খবর। মেট্রোর আধিকারিকেরা সারা রাত কন্ট্রোল রুমে থেকে পরিস্থিতির উপরে নজরদারি চালান।

মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ শনিবার সকালে ঝড়-বৃষ্টির প্রকোপ বাড়লে পরিষেবা শুরুর আগে বিশেষ ‘পাইলট’ ট্রেন চালানো হবে। পাশাপাশি, দমদম থেকে নোয়াপাড়া এবং কবি সুভাষ থেকে টালিগঞ্জের মধ্যে মাটির উপরের অংশে চালানো হবে যাত্রিবিহীন ট্রেন। পুরো মেট্রো-পথ নিরাপদ মনে হলে তবেই সকালে পরিষেবা শুরু করা হবে। একই সঙ্গে আজ মেট্রোয় ট্রেনের সংখ্যা কমছে। ২২৪টির বদলে এ দিন ১৭৪টি ট্রেন চলবে। মেট্রো স্টেশনে কোথাও প্ল্যাটফর্মের ছাদ উড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে কি না অথবা লাইনে কিছু উড়ে এসে পড়ছে কি না, সে দিকেও রাত থেকে নজর রাখছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

অন্য দিকে, সন্ধ্যা থেকে প্রবল বৃষ্টি এবং ঝড়ের পূর্বাভাস থাকায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে শিয়ালদহ দক্ষিণ ও হাসনাবাদ শাখায় এ দিন বিকেল ৩টের পর থেকে লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর জেরে বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়েন বহু মানুষ। দুপুরে আচমকা হাসনাবাদ শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বারাসতে অবরোধ করেন যাত্রীরা। বিকেল ৪টে ১০ মিনিট থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা অবরোধের জেরে শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায় চারটি লোকাল ট্রেন বাতিল করতে হয়। দেরিতে চলে ১৬টি লোকাল ট্রেন।

রেলকর্তাদের দাবি, উপকূলবর্তী যে সব অঞ্চলে তীব্র ঝড় এবং প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে সেখানে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ঝড়ের পূর্বাভাস থাকায় ওই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে খবর। এক রেলকর্তা জানান, ঝড়ে ওভারহেড তার ছিঁড়ে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

রেল সূত্রের খবর, এ দিন শিয়ালদহ থেকে ক্যানিং, ডায়মন্ড হারবার, লক্ষ্মীকান্তপুর, বারুইপুর, নামখানা-সহ বিভিন্ন শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রায় ৪০টি লোকাল ট্রেন বাতিল করা হয়। বেশ কিছু ট্রেনকে গন্তব্যে পৌঁছনোর আগে থামিয়ে দেওয়া হয়। রেল জানিয়েছে, আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতির উপরে নির্ভর করে আজ, শনিবার সকালে ওই শাখাগুলিতে ট্রেন চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলেও আজ ৩০ জোড়া লোকাল ট্রেন কম চলবে। শুক্রবার বিকেল তিনটের পর থেকে টালা এবং মাঝেরহাটের মধ্যে গঙ্গার ধার ঘেঁষে চক্ররেল চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তবে রেলের তরফে আগাম ঘোষণা ছাড়া এক লপ্তে এতগুলি ট্রেন বাতিল করায় যাত্রীরা ঘোর বিপাকে পড়েন। ঝড় আসার অনেক আগে থেকে কেন এ ভাবে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কয়েকটি শাখা বাদে অন্য শাখাগুলিতে ট্রেন চলাচল বাতিল করা হয়নি। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই পদক্ষেপ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন