মমতা আগরওয়াল
বৌমাকে বহু বার ডেকেও সাড়া পাননি শ্বশুরমশাই। মিনিট পাঁচেক পরে তিনি নিজেই দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকে দেখেন, বিছানায় চিৎ হয়ে পড়ে আছেন বৌমা। নাক-মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছে। গলায়, ডান গালে কাটা দাগ। বৃদ্ধের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। ওই মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
বুধবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে রিজেন্ট পার্কে। মৃতার নাম মমতা আগরওয়াল (৪৪)। ঠিক কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হল, সে বিষয়ে এখনও অন্ধকারে পুলিশ। তবে ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে পুলিশ জেনেছে, ওই মহিলাকে খুনের প্রমাণ মেলেনি। কিন্তু তাঁর ছেলের গালে আঁচড়ানোর দাগ থাকায় এবং দেহটি যেমন ভাবে পড়েছিল তা দেখে আরও তদন্তের দরকার আছে বলে জানিয়েছে তারা। মৃতার ভিসেরা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘ভিসেরা পরীক্ষার রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তবে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।’’ মমতার বাড়ির উল্টো দিকের বাড়িতে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ক্যামেরার ফুটেজে তেমন কিছু সূত্র পাওয়া যায়নি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
স্থানীয় সূত্রের খবর, মমতার স্বামী সুরেশ এবং ছেলে আয়ুষ বুধবার সকালে অফিস বেরিয়ে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ছিলেন মমতা এবং তাঁর শ্বশুর লক্ষ্মীনারায়ণ আগরওয়াল। স্থানীয় সূত্রের খবর, বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ মমতার এক আত্মীয় এসে একাধিক বার কলিং বেল বাজান। বৌমা ঘুমিয়ে আছেন ভেবে লক্ষ্মীনারায়ণবাবু তিনতলা থেকে নেমে দরজা খুলে দেন। এর পরে দোতলায় গিয়ে মমতাকে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু সাড়া মেলেনি। শেষে লক্ষ্মীনারায়ণবাবু দরজা খুলে দেখেন, বিছানায় অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছেন বৌমা।
পরিবার সূত্রের খবর, মমতা অস্টিয়ো-আর্থারাইটিসে ভুগছিলেন। সম্প্রতি তাঁর হাঁটুর অস্ত্রোপচার হয়েছিল। পাশাপাশি থাইরয়েডের সমস্যাও ছিল। বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীনারায়ণবাবু বলেন, ‘‘আমি গত ১৩ এপ্রিল জয়পুর থেকে এসেছি। বুধবার বিকেলে অনেকক্ষণ বেল বাজতে থাকায় তিনতলা থেকে নেমে দরজা খুলে দিই। বৌমাকে ডেকেও সাড়া পাইনি। শেষে দরজা ঠেলতে দেখি, বৌমার মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছে।’’ সুরেশ বলেন, ‘‘বুধবার দুপুরেও ফোনে স্ত্রীর সঙ্গে কথা হল। ওর তো হার্টের অসুখ ছিল না। হঠাৎ কী হল, বুঝতে পারছি না।’’