শ্যামবাজারে শিশুকন্যাকে খুন করে ড্রেনে

ঠিক দু’বছর আগে, ২০১৬ সালের ৩১ অগস্ট রাতে ব্রেবোর্ন রোডের ফুটপাতবাসী বারো বছরের এক বালিকাকে সেখান থেকে জোর করে গাড়িতে তুলে পালিয়েছিল দু’জন যুবক। পরে মেয়েটির দেহ মেলে তিলজলা এলাকায়। ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল তাকে। খিদিরপুর এলাকা থেকে ধরা পড়ে অভিযুক্ত গুড্ডু এবং শঙ্কর। তাদের বিচার চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:২১
Share:

সেই ম্যানহোল। —নিজস্ব চিত্র

ঘুমন্ত মায়ের পাশ থেকে বৃহস্পতিবার রাতে উধাও হয়ে গিয়েছিল আড়াই বছরের মেয়েটি। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে এলাকারই একটি ড্রেনে ঢাকনা-চাপা অবস্থায় মিলল তার দেহ! শ্যামবাজারের দেশবন্ধু পার্ক এলাকার শ্যামলাল স্ট্রিটের ঘটনা। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, গলা টিপে মারা হয়েছে জবা দাস নামে ওই শিশুটিকে। তবে তার শরীরে যৌন নির্যাতনের প্রমাণ মেলেনি। উল্টোডাঙা থানা ও লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ তদন্তে নামলেও শনিবার রাত পর্যন্ত অপরাধী অধরা। সন্দেহ করা হচ্ছে, শিশুটির মায়ের সঙ্গে কোনও শত্রুতার জেরেই এই খুন।

Advertisement

ঠিক দু’বছর আগে, ২০১৬ সালের ৩১ অগস্ট রাতে ব্রেবোর্ন রোডের ফুটপাতবাসী বারো বছরের এক বালিকাকে সেখান থেকে জোর করে গাড়িতে তুলে পালিয়েছিল দু’জন যুবক। পরে মেয়েটির দেহ মেলে তিলজলা এলাকায়। ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল তাকে। খিদিরপুর এলাকা থেকে ধরা পড়ে অভিযুক্ত গুড্ডু এবং শঙ্কর। তাদের বিচার চলছে।

পুলিশ জানিয়েছে, জবাকে নিয়ে রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিটের ফুটপাতে থাকতেন তার মা। সেখানেই থাকেন জবার মাসি, মেসো ও মাসতুতো ভাই-বোনেরা। জবা নিখোঁজ হওয়ার পরে শুক্রবার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল উল্টোডাঙা থানায়। সে দিনই রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ওই ফুটপাত থেকে প্রায় ৫০ মিটার দূরের একটি বা়ড়ির চত্বরে থাকা ম্যানহোলের মধ্যে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে পাওয়া যায়। আর জি কর হাসপাতালে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, যে বা়ড়ির ম্যানহোলে জবার দেহ মেলে, সেখানকার এক বাসিন্দা রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে ম্যানহোলের ঢাকনাটি কিছুটা উঠে থাকতে দেখেন। উঁকি দিয়ে শিশুটির মাথার একাংশ দেখতে পান তিনি।

Advertisement

দেখুন ভিডিয়ো

ভূগর্ভস্থ ড্রেন সাফাইয়ের জন্য চারটি ম্যানহোল রয়েছে বাড়িটিতে। তবে ড্রেনের গভীরতা মেরেকেটে ফুট দে়ড়েক। ম্যানহোলের ঢাকনাগুলিও যথেষ্ট ভারী। বাসিন্দারা জানান, সাফাইয়ের জন্য শেষ বার ওই ঢাকনা খোলা হয়েছিল জুনে।

শিশুটির মা, মাসি ও মাসতুতো ভাই-বোনেদের সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের মতে, অপরাধী এলাকা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তা না-হলে এ ভাবে দেহ লুকোনো যায় না। অপহরণের আগে একাধিক বার সে আশপাশে ঘোরাফেরা করেছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের।ঘটনাস্থলে সিসিটিভি নেই, তা রয়েছে একটু দূরে। তবে লাগোয়া রাস্তাগুলির সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ঘটনার নেপথ্যে স্থানীয় কোনও মাদকাসক্ত, ফুটপাতবাসী বা ঝুপড়িবাসীর জড়িত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ।এলাকার ফুটপাতবাসীদের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। শিশুটির মায়ের সঙ্গে সম্প্রতি কারও গোলমাল হয়েছিল কি না, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন