প্রদীপ বাগ।
একমাত্র ছেলের অকালমৃত্যু বদলে দিয়েছে তাঁর জীবন। ফলমুটে থেকে এখন তিনি সিভিক ভলান্টিয়ার। তিনি প্রদীপ বাগ, মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃত সৌমেন বাগের বাবা।
গত ৪ সেপ্টেম্বর কলেজ স্ট্রিট থেকে বই কিনে বন্ধুর সঙ্গে স্কুটিতে চেপে বেহালার শীলপা়ড়ায় মামার বাড়ি ফিরছিলেন বছর সাতাশের সৌমেন বাগ। মাঝেরহাট সেতু ভেঙে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সৌমেনের। বাবা প্রদীপ বাগ স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন পাতিপুকুরে। ছোটবেলা থেকেই সৌমেনের মামার বাড়িতে বেড়ে ওঠা। সরশুনা স্কুল থেকে সরশুনা কলেজ—বরাবর ভাল ফল করেছেন সৌমেন। বেহালার এক ওষুধের দোকানের হিসাবরক্ষক সৌমেনকে বইপোকা বলেই চিনতেন সকলে।
ছেলের মৃত্যুর পর থেকে স্ত্রী অনিতাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকছেন প্রদীপবাবু। পরিবারের স্থায়ী রোজগেরে ছেলেকে হারিয়ে বারবার ভাবছিলেন, এ বার কী ভাবে চলবে! ‘‘ছেলেটা চলে গিয়েও বাড়তি সম্মান দিয়ে গেল। সিভিক পুলিশের চাকরি পেলাম! কাজের মধ্যে ডুবে থাকব, এই যা। কিন্তু সন্তান হারানোর শোক কী কখনও ভোলা যায়!’’, বলতে বলতে চিকচিক করে উঠল প্রদীপবাবুর চোখ।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর বেহালার শীলপা়ড়ার বাড়িতে এসে সৌমেনের বাবা প্রদীপবাবুর সঙ্গে দেখা করেন ঠাকুরপুকুর থানার ওসি। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় এক তৃণমূল কাউন্সিলর। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ঠাকুরপুকুর ট্র্যাফিক গার্ডে কাজে যোগ দিয়েছেন তিনি।
যদিও এ খবরেও মন ভাল নেই সৌমেনের মা, অনীতাদেবীর। নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছেন তিনি। পুজোর আর কয়েকটা দিন বাকি। প্রতি বছর পুরো পরিবারের কেনাকাটা সৌমেনই করতেন। ফলে পুজো যত এগিয়ে আসছে কাছের মানুষগুলোর মনে ভিড় করছে সে সব কথাই।