দুর্ঘটনার পরে সেই এলাকা। শুক্রবার, বাগুইআটি মোড়ে। নিজস্ব চিত্র
বাড়ির কাছেই বাস থেকে নেমেছিলেন সুমিতা বসু (৭০)। তখনই পিছন থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা একটি বাসের ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়েন তিনি। তাঁর ডান হাত পিষে দিয়ে পালিয়ে যায় বাসটি। নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। শুক্রবার বাগুইআটি মোড়ের ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে খবর, দুপুর আড়াইটে নাগাদ ভিআইপি রোডে বিমানবন্দরগামী রাস্তায় বাগুইআটি অটোস্ট্যান্ডের কাছে ঘটে ওই দুর্ঘটনা। এক প্রত্যক্ষদর্শী বিমল মণ্ডল বলেন, “চোখের সামনে এল২৩৮ রুটের বাসকে বেপরোয়া গতিতে আসতে দেখে বয়স্ক মহিলা বাঁ হাত তুলে চালকের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।” বৃদ্ধার ডান হাত মারাত্মক জখম হয়। চোট লাগে মুখেও।
এ দিন মৃতার পুত্রবধূ জানান, সকালে মেয়ের সঙ্গে ব্যাঙ্কে যাবেন বলে বেরিয়েছিলেন পূর্ব নারায়ণতলার বাসিন্দা সুমিতাদেবী। এর পরে বাড়ি ফেরার জন্য ৪৬ নম্বর রুটের বাসে মাকে চাপিয়ে দেন মেয়ে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে মৃতার বাড়ির দূরত্ব বেশি নয়। রাস্তার ও পারে পৌঁছে একটু হাঁটলেই মৃতার ফ্ল্যাট। সুমিতাদেবীর বৌমার আক্ষেপ, “ঘরের সামনে এ ভাবে মাকে প্রাণ হারাতে হল? উনি তো বাস যেখানে দাঁড়িয়েছে সেখানেই নেমেছেন। বাসের রেষারেষির জন্য এ ভাবে মৃত্যু কি মানা যায়?”
বস্তুত, বাগুইআটির ওই অংশের যান চলাচল নিয়ে এ দিন ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয়েরা। মঞ্জুশ্রী দেব নামে এক বাসিন্দা বলেন, “প্রতীক্ষালয়ে বাস না দাঁড়িয়ে রেষারেষি করে যাত্রী তোলা এখানে নিত্যদিনের ঘটনা। রাস্তা তো কম চওড়া নয়। অন্য বাসকে ওভারটেক করার এত তাড়া কেন!” ঘটনাস্থল থেকে বাগুইআটি ট্র্যাফিক গার্ড একেবারে কাছে। ফলে ক্ষোভের মাত্রাও বেড়েছে। বিধাননগর সিটি পুলিশের এক আধিকারিক জানান, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ঘাতক বাসকে চিহ্নিত করার কাজ চলছে।