ডেঙ্গিতে স্কুলছাত্রের মৃত্যু, প্রশ্নে পুর-দাবি

পরিবার সূত্রে খবর, গত ২৫ অগস্ট জ্বর আসে নারায়ণের। কিন্তু তখন স্কুলে পরীক্ষা চলায় সে অসুস্থ অবস্থাতেই পরীক্ষা দিচ্ছিল। জ্বর না কমায় তাকে প্রথমে কাঁকুড়গাছির এক ক্লিনিকে, পরে ফুলবাগানের এক নার্সিংহোমে দেখানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:১৭
Share:

নারায়ণ শ্রেষ্ঠ

পরিবার ভেবেছিল ভাইরাল। তাই প্রথমে রক্ত পরীক্ষা হয়নি। দু’টি ক্লিনিক এবং একটি বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে ছেলেটির জ্বর কমেছিল ঠিকই। কিন্তু তার পরেই শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে ওই বালক। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে রক্ত পরীক্ষায় ধরা পড়ে ডেঙ্গি। তত ক্ষণে তাকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়েছে। ক্রমেই অবস্থার অবনতি হতে থাকে তার। গত বৃহস্পতিবার রাতে বাইপাসের এক হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই বালকের। মৃতের নাম নারায়ণ শ্রেষ্ঠ (১০)। বাড়ি দত্তাবাদে। মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গি লেখা হয়েছে। ওই দিনই আইডি হাসপাতালে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয় বাগুইআটির বাসিন্দা রিঙ্কু ঘোষের (৩৪)। তাঁর স্বামী সুশান্ত ঘোষ জানান, রক্ত পরীক্ষায় স্ত্রীর ডেঙ্গি ধরা পড়ে। যদিও বিধাননগর পুরসভার দাবি, ওই মহিলা ভাইরাল-জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।

Advertisement

পরিবার সূত্রে খবর, গত ২৫ অগস্ট জ্বর আসে নারায়ণের। কিন্তু তখন স্কুলে পরীক্ষা চলায় সে অসুস্থ অবস্থাতেই পরীক্ষা দিচ্ছিল। জ্বর না কমায় তাকে প্রথমে কাঁকুড়গাছির এক ক্লিনিকে, পরে ফুলবাগানের এক নার্সিংহোমে দেখানো হয়। পরিবার জানিয়েছে, তার পরে জ্বর কমলেও শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। অভিযোগ, বুধবার তাকে ফের ফুলবাগানের ওই নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে সেখান থেকে অন্যত্র যেতে বলা হয়। রাতেই নারায়ণকে ভর্তি করা হয় বাইপাসের ধারে এক হাসপাতালে। নারায়ণের বাবা কমল বাহাদুর শ্রেষ্ঠ কলেজ স্ট্রিটে একটি বইয়ের দোকানে কাজ করেন। দত্তাবাদে তাঁর ছোট্ট দু’কামরার বাড়ি। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন মা প্রমীলাদেবী।

গত বছরই দত্তাবাদে ডেঙ্গি ছড়িয়েছিল। বিধাননগর পুরসভার দাবি, তা থেকে শিক্ষা নিয়ে বছরভর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু দিন কয়েক আগে দুই কিশোরের ডেঙ্গি-আক্রান্ত হওয়া এবং নারায়ণের মৃত্যু সেই দাবি নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

Advertisement

মৃত নারায়ণ শ্রেষ্ঠর বাড়ির পাশে এ ভাবেই পড়ে থাকা টায়ারে জমে আছে জল। শুক্রবার, দত্তাবাদে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

পরজীবী বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই মরসুমে জ্বর হলেই রক্ত পরীক্ষা জরুরি। কিন্তু তা নিয়ে রোগীর পরিবার ও চিকিৎসকদের একাংশও সচেতন নন। স্থানীয় কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ রাজেশ চিরিমার বলেন, ‘‘আমার এলাকায় নিয়মিত মশার তেল দেওয়া হয়। জ্বর হলেই রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। ওয়ার্ডে জ্বরের সংক্রমণ নেই। তবুও এই ঘটনার পরে মশা নিধনে আরও জোর দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন