প্রতীকী ছবি।
মাথার কাছে ডাল, চিনি, মুড়ির কৌটো। ঘরে কোনও পাখা নেই। তোষকের উপরে পড়ে রয়েছে যুবকের পচাগলা মৃতদেহ। সোমবার রাতে, দমদমের বেদিয়াপাড়ার ঘটনা। মৃতের নাম সোমনাথ সরকার (৪৫)।
পুলিশ সূত্রের খবর, বাবা-মায়ের মৃত্যুর পরে বরাহনগরের ফ্ল্যাট বিক্রি করে দেন সোমনাথ। বেদিয়াপাড়ায় পাউরুটি কারখানার গলিতে বিরাট বিশ্বাসের বাড়ির একতলার একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন প্রায় আট মাস আগে। বিরাটবাবু জানান, গত চার-পাঁচ দিন ধরে সোমনাথকে তিনি দেখেননি। সাধারণত সোমনাথ প্রতি দিন সকালে বেরিয়ে যেতেন, ফিরতেন রাতে। মৃত যুবক ছবি তোলার পেশার সঙ্গে যুক্ত বলেই জানতেন বাড়ির মালিক। তবে মৃতের কোনও পরিচয়পত্র দিতে পারেননি তিনি। বিরাটবাবুর কথায়, ‘‘সোমবার সকাল থেকে দুর্গন্ধ পাচ্ছিলাম। সন্ধ্যায় দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গ্যারাজ থেকে সোমনাথের ঘরে উঁকি মেরে দেখি এই অবস্থা।’’ রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ দরজা ভেঙে দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশের অনুমান, অন্তত পাঁচ দিন আগে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। দেহটি পচে পোকা ধরে গিয়েছিল। দরজা ভিতর থেকে আটকানো ছিল। কিন্তু গ্রিলের বাইরেও তালা লাগানো ছিল। তবে তা ভিতরে থেকেও লাগানো সম্ভব বলে মত তদন্তকারীদের।
পাঁচ দিন দেহ পড়ে রইল অথচ কেউ টের পেলেন না? বাড়ির মালিক বলেন, ‘‘সোমনাথ বেশি কথা বলতেন না। বাড়িতে বিশেষ বন্ধুবান্ধবও আসত না। তালা দেখে ভেবেছিলাম, কোথাও গিয়েছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দা মৃন্ময় দাস বলেন, ‘‘পাড়ায় কারও সঙ্গে কথা বলতেন না সোমনাথ।’’
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মৃত যুবক আর্থিক অনটনের মধ্যে ছিলেন। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত মৃতের কোনও আত্মীয়স্বজনের খোঁজ পায়নি পুলিশ। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, ময়না-তদন্ত হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।