এত দিন কোথায় ছিলেন, ডেঙ্গি-মিছিল দেখে প্রশ্ন

ওই পদযাত্রা দেখে এলাকাবাসীর অবশ্য প্রশ্ন, মিছিল তো হল, কিন্তু সাফাইকাজ কবে হবে? কারণ, এক সপ্তাহ আগে উত্তর হাওড়ায় জিটি রোডের পাশে বাবুডাঙা বা কালী মজুমদার রোডের যে অবস্থা ছিল, এখনও তা বদলায়নি।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪১
Share:

হাওড়ার জে এন মুখার্জি রোডে ফগিংয়ে হাত লাগিয়েছেন বিধায়ক অরূপ রায়, শনিবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

উত্তর থেকে দক্ষিণ, গোটা হাওড়াই যখন ডেঙ্গিতে কাঁপছে, তখন ওই রোগ নিয়ে সচেতনতার প্রসারে শনিবার পদযাত্রা হল উত্তর হাওড়ায়। যাতে পা মেলালেন মন্ত্রী থেকে পুলিশ ও প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা। ছিলেন পুরসভার পোশাক পরা সাফাইকর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও।

Advertisement

ওই পদযাত্রা দেখে এলাকাবাসীর অবশ্য প্রশ্ন, মিছিল তো হল, কিন্তু সাফাইকাজ কবে হবে? কারণ, এক সপ্তাহ আগে উত্তর হাওড়ায় জিটি রোডের পাশে বাবুডাঙা বা কালী মজুমদার রোডের যে অবস্থা ছিল, এখনও তা বদলায়নি। রাস্তার পাশে এখনও জমে আছে জল। নর্দমার পাশে ফেলে দেওয়া টায়ারের ভিতরে জমা জলে কিলবিল করছে মশার লার্ভা। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডেঙ্গি রুখতে সাফাই অভিযান একটি নির্দিষ্ট এলাকাতেই সীমাবদ্ধ থেকে গিয়েছে।

হাওড়া পুরসভার ডাকে এ দিন ডেঙ্গি মোকাবিলায় পদযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল সালকিয়ার এক নম্বর ওয়ার্ডের জে এন মুখার্জি রোডে। তাতে যোগ দেন রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী তথা মধ্য হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক অরূপ রায়, জেলাশাসক মুক্তা আর্য, পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা, প্রাক্তন মেয়র পারিষদ শ্যামল মিত্র, পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ-সহ জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভার নিকাশি দফতরের পদস্থ কর্তারা। মিছিলের আগে গোটা এলাকায় ব্লিচিং ছড়িয়ে সাফসুতরো করার চেষ্টা হয়। মিছিলে রাখা হয় মশার ওষুধ দেওয়া ন্যাপস্যাক ও ফগিং মেশিন। বাঁধাঘাট থেকে ফুলঘাট পর্যন্ত মিছিল যাওয়ার রাস্তার দু’পাশের নর্দমা ও রাস্তার জমা জল পরিষ্কার করা হয়। মশা মারার ওষুধ দেওয়া হয় নর্দমায়। মিছিল দেখে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত সাত মাস ধরে এলাকায় পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখা যায়নি। এলাকার নালা-নর্দমাও পরিষ্কার করা হয়নি বহুদিন। জমা জলে জন্মানো মশার দাপটে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়েছে তাঁদের।

Advertisement

এলাকার বাসিন্দা সুজিত রায় বলেন, ‘‘এ তো মরার সময়ে হরিবোল হচ্ছে। এত দিন সবাই কোথায় ছিলেন? এর পরে নিয়মিত সাফাই হবে তো?’’ বাসিন্দাদের অভিযোগ, গোটা এলাকায় মশায় কামড়ে টেকা যাচ্ছে না। আবর্জনা জমে আছে অলিতে-গলিতে। এ দিন কয়েক জায়গায় সাফাইয়ের কাজ হলেও অধিকাংশ এলাকা একই তিমিরে থেকে গিয়েছে। বাসিন্দাদের এই দাবি মানছেন সমবায়মন্ত্রী অরূপবাবুও। তিনি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে আগেই উদ্যোগী হওয়া উচিত ছিল। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত সকলে মিলে একত্রিত হয়ে আমরা ঝাঁপিয়ে পড়েছি। এতেই অনেকটা কাজ হবে।’’

পুর কমিশনার অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা সব এলাকাতেই কাজ করেছেন। আসলে পুরসভায় বহু গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য রয়েছে। সেগুলিতে লোক থাকলে অনেক কাজেই সুবিধা হত। তবে এই অভিযানের ফলে মানুষ অনেকটাই সচেতন হবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন