গত বছরের শুরুতেই পার্ক সার্কাস চার নম্বর ব্রিজে কেব্ল তারের জটে আটকে মৃত্যু হয়েছিল এক মোটরবাইক চালকের। ওই ঘটনার পরেই কলকাতা পুলিশের তরফে কেব্ল অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল। বলা হয়েছিল, শহরে রাস্তায় বিপজ্জনক ভাবে কেব্ল তার পড়ে থাকলে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি, পুরসভার তরফেও কেব্ল অপারেটরদের সতর্ক করা হয়েছিল। এর পরে প্রায় দেড় বছর পেরিয়ে গিয়েছে, তারের জটের ছবিটা কিন্তু আদৌ বদলায়নি।
দক্ষিণ কলকাতার ডায়মন্ড হারবার রোড, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট, আশুতোষ মুখার্জি রোড থেকে শুরু করে প্রায় সব রাস্তায় গিয়ে দেখা গেল, ফুটপাতের যত্রতত্র ঝুলছে কেব্লের তার। কোথাও আবার তার পড়ে রয়েছে ফুটপাতেই। বেহালা থানার পাশ দিয়ে ডায়মন্ড হারবার রোড ঘেঁষা ফুটপাত দিয়ে বাচ্চাকে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক মহিলা। তাঁর কথায়, ‘‘তার বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে থাকে, কখনও মাটিতে ফেলে রাখা থাকে। ফলে হোঁচট খাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই সতর্ক হয়ে হাঁটতে হয়।’’ অভিযোগ যে মিথ্যা নয়, তা মানছেন কালীঘাট মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন রাসবিহারী অ্যাভিনিউ দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করা পথচারীরা। সেখানেও কেব্লের তার ঝুলছে। তাঁদের কথায়, ‘‘মাস খানেক আগে এক বৃদ্ধা কেব্লের তারে পা আটকে মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন।’’ গত বছরের শুরুতেই পার্ক সার্কাসে দুর্ঘটনার পরে পুলিশের সঙ্গে কেব্ল অপারেটরদের বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, কুণ্ডলী পাকানো তার ভ্যাটে ফেলতে হবে। পাশাপাশি, মাটি থেকে কমপক্ষে কুড়ি ফুট উঁচুতে তার রাখতে হবে। যাতে গাড়ি বা মালগাড়ি যাওয়ার সময়ে কোনও অঘটন না ঘটে। প্রায় দেড় বছর পরেও বৈঠকের যাবতীয় সিদ্ধান্ত এখনও যে খাতায়কলমে তা বিভিন্ন এলাকা ঘুরলেই স্পষ্ট। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘কেব্ল তার যাতে দ্রুত সরানো হয় সে বিষয়ে কেব্ল অপারেটরদের বলা হয়েছিল। আমরাও বিষয়টি দেখব।’’ প্রায় দেড় বছর আগে কেবল অপারেটরদের নির্দেশ দেওয়া হলেও কেব্ল তারের জট এখনও কেন? ডিসি (ট্র্যাফিক) সন্তোষ পাণ্ডেকে ফোন করা হলে তিনি তা ধরেননি, মেসেজেরও কোনও উত্তর দেননি।
মেয়র ফিরহাদ হাকিমের অবশ্য আশ্বাস, “ভোটের জন্য শহরকে তারের জটমুক্ত করার প্রক্রিয়া থমকে ছিল। এ বার সে কাজে গতি আসবে।”