Heavy Rain In Kolkata

৬ ঘণ্টার বৃষ্টিতে কলকাতায় মৃত ৮! জানা গেল নাম এবং পরিচয়, জমা জলে বিদ্যুতের ছেঁড়া তারই ঘটাচ্ছে অঘটন, জখম এক

দুর্যোগের কলকাতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন (সিইএসসি)-কে দায়ী করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:২৮
Share:

রাতভর বৃষ্টিতে জলমগ্ন শহরের একটি দৃশ্য। ছবি: পিটিআই।

মাত্র ৬ ঘণ্টার বৃষ্টি কেড়ে নিল আটটি প্রাণ! কলকাতার পাশের জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনা ধরলে মৃতের সংখ্যা ৯। জখম হয়েছেন এক জন। মঙ্গলবার পুলিশ সূত্রে এমনটাই খবর। জানা গিয়েছে নিহত এবং আহতদের নাম-পরিচয়।

Advertisement

মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টা নাগাদ ইনভার্টার চালাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন এক নিরাপত্তারক্ষী। পবন গোস্বামী নামে ওই যুবকের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। ৩৪ বছরের ওই যুবক কাজ করতেন মিন্টো পার্ক এলাকার একটি হোটেলে। তাঁকে উদ্ধার করে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকেরা পবনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

জমা জলে বিদ্যৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন একবালপুরের এক বৃদ্ধ। নাম জিতেন্দ্র সিংহ। ৬০ বছরের ওই বৃদ্ধকে একবালপুর থানা এলাকায় জলমগ্ন একটি রাস্তা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। বিদ্যুতের ভেজা খুঁটি থেকে তড়িদাহত হন তিনি। ভোর ৫টা নাগাদ তাঁকে উদ্ধার করে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন আগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

Advertisement

সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে বেনিয়াপুকুর থানা এলাকার জলমগ্ন রাস্তা থেকে উদ্ধার করা হয় ৫০ বছরের ফিরোজ় আলি খানকে। তিনিও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের বাসিন্দা। ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন তাঁকে।

গড়ফা থানার কালিকাপুরেও ৭টা ১৫ মিনিটে উদ্ধার করা হয় স্থানীয় বাসিন্দা রামগোপাল পণ্ডিতকে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া রামগোপালকে মৃত বলে ঘোষণা করেন এমআর বাঙুর হাসপাতালের চিকিৎসক। নেতাজি নগরের বাসিন্দা ৬২ বছরের প্রাণতোষ কুন্ডুকে জলমগ্ন রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। এমআর বাঙুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন তিনিও।

বেহালা থানা এলাকার একটি রাস্তায় সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে পড়ে থাকতে দেখা যায় এক যুবককে। এমআর বাঙুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে। জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সুনীল সূর্য। ৩৫ বছরের যুবকের বাড়ি বিহারের নওদা জেলায়।

টানা বৃষ্টিতে জলভাসি রাস্তায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন বছর পঁচিশের এক যুবক। নাম শুভ প্রামাণিক। সকাল ৯টা নাগাদ ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা ওই যুবককে হরিদেবপুর থেকে উদ্ধার করে এমআর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে গড়িয়াহাট থানা এলাকাতেও। পুলিশের একটি সূত্রে খবর, বালিগঞ্জ প্লেস এলাকায় সন্দীপ গুহঠাকুরতা নামে এক জনকে একটি দোকান থেকে উদ্ধার করা হয়। মনে করা হচ্ছে তিনি তড়িদাহত হয়ে মারা গিয়েছেন। কলকাতা ছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এক জন মারা গিয়েছেন। শাসনের বাসিন্দা মিরাজ শেখের বয়স ৫০ বছর।

একবালপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জখম হয়েছেন মমতাজ বিবি নামে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধা।

দুপুরেও জলমগ্ন শহরের রাজপথ। —নিজস্ব চিত্র।

অন্য দিকে, দুর্যোগের কলকাতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন (সিইএসসি)-কে দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘নিউজ়১৮ বাংলা’-কে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এর (দুর্ঘটনার) দায় সিইএসসি-কে নিতে হবে। এখনই তারা জরুরি ভিত্তিতে কর্মীদের নামাক।” বেসরকারি বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকে নিশানা করে তিনি আরও বলেন, “এখানে ব্যবসা করছে। আর পরিকাঠামো আধুনিকীকরণের (মডার্নাইজ়েশন) কাজ করছে রাজস্থানে! এখানে আধুনিকীকরণের কাজ করছে না। বলতে বলতে আমার মুখ ব্যথা হয়ে গিয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement