রঙে-চিহ্নে আলাদা হবে শহর ও শহরতলির অটো

আগে ছিল হলুদ-কালো। তার পরে হল সবুজ। এ বার শহরাঞ্চল আর গ্রাম-মফস্সলের অটোর রং হবে আলাদা। থাকবে পৃথক চিহ্নও।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ০০:২৮
Share:

আগে ছিল হলুদ-কালো। তার পরে হল সবুজ। এ বার শহরাঞ্চল আর গ্রাম-মফস্সলের অটোর রং হবে আলাদা। থাকবে পৃথক চিহ্নও।

Advertisement

রুট পারমিট নিয়ে গোলমালে কোন পথে অটো চলবে, কোথায় ‘নো এন্ট্রি’ থাকবে, সে সব নিয়ে রয়েছে বিস্তর সমস্যা। জটিলতা রয়েছে অটোর রেজিস্ট্রেশন ও চালকের লাইসেন্স নিয়েও। এ সব কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে চালক বা যাত্রী— বিমার টাকা পেতেন না কোনও পক্ষই। শহরাঞ্চলের অটো যাত্রী নিয়ে ঢুকে পড়ত গ্রামে। মফস্সলের অটোর অবাধ যাতায়াত ছিল শহরে। এ সব সমস্যায় রাশ টানতেই এ বার অটোর রং আলাদা করার পাশাপাশি রুট পারমিট, রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্স নিয়েও নতুন বিধিনিষেধ চালু করছে পরিবহণ দফতর।

রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী সম্প্রতি বলেন, ‘‘অটোর রুট পারমিট ও লাইসেন্সের মতো সমস্যার সমাধানে পুলিশ এবং পরিবহণ দফতর মিলে একটি রূপরেখা তৈরি করছে। সেই পরিকল্পনার মধ্যে শহর ও গ্রামের অটোর রং আলাদা করার বিষয়টিও রয়েছে। শীঘ্রই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত নির্দেশিকা বেরোবে।’’

Advertisement

অটো শাসনে কেন নামছে রাজ্য সরকার? ২০০৫ সালে হাইকোর্ট এক নির্দেশিকায় জানিয়েছিল, শহর কলকাতায় নতুন করে আর অটোর পারমিট দেওয়া যাবে না। কিন্তু গত কয়েক বছরে যাত্রী বেড়েছে প্রচুর। চাহিদা মাফিক প্রচুর অটোও বেরিয়েছে। ফলে নতুন রুট পারমিট না পাওয়ায় অবৈধ অটোর সংখ্যাও বেড়ে হয়েছে আগের চেয়ে দ্বিগুণ। নির্দিষ্ট নিয়ম না থাকায় মর্জিমাফিক ভাড়া দাবি, অধিক যাত্রী বহন এবং যাত্রী-প্রত্যাখ্যান নিয়ে প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও গোলমাল লেগেই থাকছে। রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই সব সমস্যা এড়াতে অটোকে একটি নিয়মের মধ্যে আনার জন্যই পুলিশ ও পরিবহণ দফতর মিলে এই রূপরেখা তৈরি করছে।’’

কী থাকছে নতুন নিয়মে?

ওই দফতর সূত্রে খবর, প্রথমত, রুট অনুযায়ী অটোর সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হবে। দ্বিতীয়ত, কোন জায়গায় কত অটোর চাহিদা রয়েছে, সেই হিসেবে বেশি অটো থাকলে বাতিল এবং কম অটো থাকলে সেখানে নতুন অটো দেওয়া হবে। ত়়ৃতীয়ত, প্রতিটি অটোর রেজিস্ট্রেশন, নম্বর প্লেট, চালকের লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হবে, যাতে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে চালক ও যাত্রীর পাশাপাশি গাড়ি সারানো বাবদও বিমার টাকা মেলে।

পুলিশ জানিয়েছে, ২০১০ সালে হাইকোর্ট অটো নিয়ে আর একটি নির্দেশিকা দিয়েছিল। তাতে অটো চালানোর ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতির কিছু পরিবর্তন করা হয়। ডিজেল-চালিত হলুদ-কালো রঙের অটো বাতিল করে এলপিজি-চালিত সবুজ রঙের অটো চালু করা হয়। কিন্তু জ্বালানির সমস্যা থাকায় সর্বত্র এলপিজি অটো চালু হয়নি। পাশাপাশি, রুট নিয়ে বিধি-নিষেধ না থাকায় শহরতলি ও গ্রামেও বল্গাহীন ভাবে চলতে থাকে অটো। তাতেই রাশ টানতে এই ব্যবস্থা।

কেমন হবে সেই ব্যবস্থা? উত্তর ২৪ পরগনার আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা সিদ্ধার্থ রায়ের কথায়, ‘‘এই জেলার বিধাননগর ও ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকায় অটোর এক রকমের রং বা চিহ্ন থাকবে। আবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ এলাকার অটোর চিহ্ন হবে আলাদা। সমস্ত অটো এই নিয়মনীতির মধ্যে চলে এলে নিয়ন্ত্রণ থাকবে, সমস্যাও হবে কম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন