মেডিক্যালে অনশনে চিকিৎসকেরাও

পড়ুয়াদের লাগাতার অনশনের পরেও সমাধান সূত্র মেলেনি। তাই মঙ্গলবার সকাল থেকেই পড়ুয়াদের সমর্থনে প্রতীকী অনশন শুরু করেন চিকিৎসকেরাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৮ ০২:২৫
Share:

প্রতীকী অনশনে চিকিৎসকেরা। মঙ্গলবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী

কেটে গিয়েছে ১৭০ ঘণ্টা। পড়ুয়াদের লাগাতার অনশনের পরেও সমাধান সূত্র মেলেনি। তাই মঙ্গলবার সকাল থেকেই পড়ুয়াদের সমর্থনে প্রতীকী অনশন শুরু করেন চিকিৎসকেরাও। এ দিকে দুপুরে কর্তৃপক্ষের তরফে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সাংবাদিক সম্মেলন করার সময়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। দিনভর হাসপাতাল চত্বরে কর্তৃপক্ষ ও পড়ুয়াদের মধ্যে এই টানাপড়েনের জেরে উত্তেজনা আরও বাড়ল।

Advertisement

কয়েক সপ্তাহ ধরেই হস্টেলের দাবিতে সরব কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমবিবিএস তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়াদের একাংশ। সপ্তাহ খানেক আগে অধ্যক্ষকে ঘেরাও করেন তাঁরা। তারই মধ্যে কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে যায় পুলিশ। এতে ক্ষোভ বাড়ে পড়ুয়াদের মধ্যে। ছ’জন ছাত্র অনশন শুরু করেন। তার পরেও পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি।

এ দিন ছাত্রদের আন্দোলনের সমর্থনে সকাল ৯টা থেকে প্রতীকী অনশনে বসেন রেজাউল করিম, গৌতম মুখোপাধ্যায়ের মতো ২০ জন বরিষ্ঠ চিকিৎসক। যাঁদের একাংশ ওই কলেজেরই প্রাক্তনী। অনশন চলাকালীন তাঁরা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ উচ্ছল ভদ্রের সঙ্গে কথা বলতে যান। তবে হাসপাতাল সূত্রের খবর, উচ্ছলবাবু তাঁদের জানান, তিনি দু’মাস অধ্যক্ষের পদে এসেছেন। তাঁর পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়।

Advertisement

আন্দোলনকারী ছাত্রদের অভিযোগ, প়়ড়ুয়াদের হস্টেলের ব্যবস্থা করতে হবে। বর্তমানে অধিকাংশ পড়ুয়ার হস্টেলে নির্ধারিত ঘরই নেই। ফলে তাঁদের বারান্দায় থাকতে হচ্ছে। যে ঘর রয়েছে, সেগুলোর ছাদ ভেঙে পড়েছে। তাই নতুন ১১ তলা হস্টেলে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের ঘর নির্ধারণের সময়ে বর্তমান পড়ুয়াদেরও ঘর দেওয়ার দাবি নিয়ে সরব হয়েছেন তাঁরা। এ দিন দুপুরে উচ্ছলবাবু সাংবাদিক বৈঠকে জানান, আবেদনের তালিকা দেখে ঘর নির্ধারণ শুরু হয়েছে। সময় লাগবে। কিন্তু নতুন হস্টেলে বর্তমান পড়ুয়াদের ঘর দেওয়া যাবে না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার নিয়ম, প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের সঙ্গে সিনিয়রদের একই বিল্ডিং-এ রাখা যাবে না।’’ এর পরেই দুপুর আড়াইটে নাগাদ তিনি জানান, তিনি অসুস্থ বোধ করছেন। তাঁকে ওই হাসপাতালের কার্ডিয়োলজি বিভাগের আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক পর্বের রিপোর্টে সব কিছু স্বাভাবিক। যদিও রাতে তাঁকে এসএসকেএমের আইটিইউ-এ স্থানান্তরিত করা হয়।

এ দিন বিকেলে অনশনরত পড়ুয়াদের সঙ্গে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেখা করতে যান একটি সংগঠনের তরফে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অশোকনাথ বসু, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়-সহ ছ’জন। পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলার পরে আনন্দদেববাবু বলেন, ‘‘অধ্যক্ষকে অনুরোধ করব, উনি পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মিটিয়ে নিন।’’ অশোকনাথবাবুর মতে, ‘‘টানা কয়েক দিন অনশন চালাচ্ছে পড়ুয়ারা। বড় বিপদ হলে দায় কে নেবেন? এই দায় কলেজ কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল সকলের। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে এমন সমস্যা চলতে পারে না। ছাত্রদের সঙ্গে কথা না বলে, শুধু নিজের মতে স্থির থাকলে সমস্যা বাড়বে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement