মাদক সংক্রান্ত একটি মামলায় তদন্তকারী গোয়েন্দা অভিযুক্তদের আড়াল করতে চাইছেন বলে মন্তব্য করে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে তলব করল হাইকোর্ট। এই মামলাতেই গত জানুয়ারি মাসে তদন্তে গাফিলতির দেখিয়ে কলকাতা পুলিশকে তুলোধোনা করেছিল আদালত। হাইকোর্টের বিচারপতি সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় গত ২৮ জুন পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী ১৫ জুলাই তাঁর আদালতে হাজির হয়ে মামলার তদন্ত সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে।
পুলিশ সূত্রের খবর, একটি রেভ পার্টিতে মাদক সরবরাহের অভিযোগে লালবাজারের গোয়েন্দারা ২০১২ সালে মেলভিন স্মিথ নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেন। মেলভিনকে জেরা করে রাজীব মোহতা নামে এক মাদক পাচারকারীর সন্ধান মেলে। সূত্রের খবর, রাজীব জেরায় কবুল করে শহরের রেভ পার্টিতে মাদক পাচারে যুক্ত রয়েছে হ্যামবার্গ, চার্লস ও ডোনাল্ড নামে আরও তিন যুবক। গোয়েন্দাদের কাছে দেওয়া বয়ানে রাজীব এও জানায়, ওই তিন যুবক কোন রাজ্যে থাকে এবং তাদের ঠিকানাই বা কি।
লালবাজার সূত্রে খবর, গত জানুয়ারি মাসে মাদক পাচারের ঘটনায় অন্য এক অভিযুক্তের দায়ের করা মামলায় বিচারপতি চট্টোপাধ্যায় তদন্তে গাফিলতি পেয়ে তদন্তকারী অফিসারকে সরিয়ে অন্য কোনও অফিসারকে নিযুক্ত করতে বলেন। সেই মতো মাদক-দমন শাখার সাব-ইনস্পেক্টর শিলাদিত্য শর্মাকে এই মামলার তদন্ত ভার দেওয়া হয়। গত শুক্রবার এই মামলার
শুনানি ছিল। মামলার কেস ডায়েরি পড়ে তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি। সরকারি কৌঁসুলির
কাছে বিচারপতি জানতে চান, অভিযুক্ত রাজীব অন্য তিন অভিযুক্তের ঠিকানা বলে দেওয়া সত্ত্বেও কী কারণে তদন্তকারী অফিসার সেখানে তল্লাশি না করে দিল্লি, মুম্বই ও চেন্নাইতে ঘুরে বেড়িয়েছেন। বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘সরকারি টাকায় ঘুরে বেড়ানোই কি তাঁর কাজ? তদন্তকারীর দাখিল করা রিপোর্টে স্পষ্ট নয়, কেন তিনি ওই সব জায়গায় গিয়েছেন।’’ বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়ের পরের মন্তব্য, ‘‘তদন্তকারী জানেন অভিযুক্তদের কোথায় গেলে পাওয়া যাবে। তা জেনেও তিনি তাদের আড়াল করার চেষ্টা করেছেন।’’