জাতীয় সৌধের বাধা কাটল মেট্রোর

সংস্কৃতি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মহেশ শর্মা আশ্বাস দিয়ে জানান, ‘‘বিরলের মধ্যে বিরলতম ক্ষেত্রগুলিতেই জাতীয় স্বার্থের কথা ভেবে আইনটি সংশোধন করা হল। কোনও বেসরকারি প্রকল্প এর থেকে ফায়দা পাবে না।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৫০
Share:

এই সিনাগগ-সহ তিনটি সৌধের জন্যই আটকে ছিল কাজ। ফাইল চিত্র।

অবশেষে ‘হেরিটেজ’ জট কাটল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর।

Advertisement

মঙ্গলবার সংরক্ষিত প্রাচীন সৌধ এলাকায় খনন সংক্রান্ত সংশোধনীটি লোকসভায় পাশ হল। এর ফলে মহাকরণ থেকে হাওড়ার দিকে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের পথে থাকা সংরক্ষিত তিনটি প্রাচীন সৌধের জন্য যে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ আটকে ছিল, তা শুরু করা যাবে বলে জানিয়েছে রেল মন্ত্রক। এর জন্য অবশ্য বিরোধীদের কারও কারও সমালোচনার মুখে পড়তে হয় শাসক শিবিরকে। কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘এর ফলে প্যান্ডোরার বাক্স খুলে যাবে।’’ সরকারের এই উদ্যোগকে অবশ্য স্বাগত জানান তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

সংস্কৃতি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মহেশ শর্মা আশ্বাস দিয়ে জানান, ‘‘বিরলের মধ্যে বিরলতম ক্ষেত্রগুলিতেই জাতীয় স্বার্থের কথা ভেবে আইনটি সংশোধন করা হল। কোনও বেসরকারি প্রকল্প এর থেকে ফায়দা পাবে না।’’

Advertisement

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে এসপ্ল্যানেড থেকে বি বা দী বাগ হয়ে হাওড়া যাওয়ার প্রস্তাবিত নকশায় তিনটি প্রাচীন সৌধের অবস্থান রয়েছে। এর মধ্যে একটি কারেন্সি বিল্ডিং, অন্য দু’টি ইহুদিদের প্রাচীন সিনাগগ বা প্রার্থনাগৃহ। এত দিন যে আইন ছিল সেই ‘এনশেন্ট মনুমেন্ট অ্যান্ড আর্কিওলজিক্যাল সাইট অ্যান্ড রিমেন্স অ্যাক্ট’ অনুযায়ী, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (এএসআই) দ্বারা নির্দিষ্ট করে দেওয়া প্রাচীন সৌধের একশো মিটারে কোনও রকম খননকাজ চালানোই যাবে না। একশো থেকে দু’শো মিটারের মধ্যে খনন করতে গেলে এএসআই-র অনুমতি নিতে হবে। ইস্ট-ওয়েস্টের প্রস্তাবিত নকশায় একশো মিটারের মধ্যে তিনটি সৌধ থাকায় খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ হয়ে যায়।

রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর, আইনের ওই বাধার বিষয়টি জানার পরে তৎপর হয় রাজ্য সরকার। রেলমন্ত্রকের কাছে সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনের সুপারিশ করা হয়। রেলমন্ত্রক বিষয়টি জানায় সংস্কৃতি মন্ত্রককে। গত বছরের শুরুতে দিল্লিতে এসে সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীনে থাকা ন্যাশন্যাল মনুমেন্ট অথরিটির সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। রেলের পাশাপাশি একাধিক ওই নিয়মের কারণে একাধিক জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণ আটকে যাওয়ায় ওই আইনে ছাড় দেওয়ার দাবি জানিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রকের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রক। বিভিন্ন শিবির থেকে আবেদন আসায় গত মে এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সংশোধনী আনা হয়।

সড়ক বা রেললাইন নির্মাণের মতো জাতীয় স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে, এমন কাজের কথা চিন্তা করেই ওই সংশোধনী আনা হয়েছে বলে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী মহেশ শর্মা জানান। তিনি বলেন, ‘‘ইস্ট-ওয়েস্ট ও পুণে মেট্রো, দিল্লিতে যমুনার উপরে সেতু নির্মাণ— এ রকম একাধিক কাজের জন্য ওই ছাড়পত্র জরুরি ছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন