East West Metro

কড়াকড়ি চালুর আগেই সুড়ঙ্গের কাজ শেষ করল উর্বী

শেষ মুহূর্তে গতি বাড়িয়ে দড়ি ছোঁয়ার মতো করেই প্রত্যাশিত সময়ের আগে শনিবার রাত ১১টায় লক্ষ্যে পৌঁছল সে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২১ ০৫:৫৭
Share:

ফাইল চিত্র।

করোনাকে রুখতে রাজ্যে সরকারি বিধিনিষেধ বলবৎ হওয়ার আগেই নিজের দৌড় সম্পূর্ণ করল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ‘টানেল বোরিং মেশিন’ (টিবিএম) ‘উর্বী’। শেষ মুহূর্তে গতি বাড়িয়ে দড়ি ছোঁয়ার মতো করেই প্রত্যাশিত সময়ের আগে শনিবার রাত ১১টায় লক্ষ্যে পৌঁছল সে।

Advertisement

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কর্মী ও আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের প্রবল বৃষ্টিতে কাজ ব্যাহত না হলে বৃহস্পতিবারই শিয়ালদহ থেকে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ বৌবাজার পর্যন্ত পৌঁছে যেত। কিন্তু, বৃষ্টি বাদ সাধায় লক্ষ্যে পৌঁছতে খানিকটা দেরি হয়। এর মধ্যে শুক্রবার ইদের ছুটি থাকায় কোনও কাজ হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতে বৌবাজারে আগের বারের দুর্ঘটনাস্থল থেকে ঠিক ১৮ মিটার দূরে ছিল উর্বী। সেই দূরত্ব আজ, রবিবার বিকেলের মধ্যে পেরিয়ে যাওয়া যাবে বলে ভাবা হয়েছিল। কিন্তু, এ দিন রাজ্য সরকার নানাবিধ কড়াকড়ির কথা ঘোষণা করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ সম্পূর্ণ করার কথা ভেবে ফেলা হয়। সেই মতো গতি বাড়িয়ে এ দিন রাতেই বৌবাজারে আগের বারের দুর্ঘটনাস্থলের পরিসর ছুঁয়ে এ যাত্রায় পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ খননের কাজ সম্পূর্ণ করল উর্বী। এখন দুর্ঘটনাস্থলে ৪০ মিটারের একটি পরিসরে আবদ্ধ রয়েছে টিবিএম ‘চণ্ডী’। ওই টিবিএম উদ্ধারের পরে উর্বীকেও একই জায়গা থেকে তুলে আনা হবে। তার পরে মাঝের দূরত্বে সুড়ঙ্গের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করে জুড়ে দিলেই শিয়ালদহ থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত মেট্রোপথ তৈরি হয়ে যাবে যাবে। তবে, ওই অংশে আর নতুন করে টিবিএম ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে না। হাওড়া থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত সুড়ঙ্গ আগেই তৈরি হয়ে আছে। ফলে, এখন বৌবাজারের অংশটুকু জুড়ে গেলে হাওড়া থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গপথে যাতায়াতে বাধা থাকবে না। পাশের পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের কাজ আগেই সম্পূর্ণ হয়েছে।

টিবিএম চণ্ডী শিয়ালদহ অভিমুখে আসার সময়ে ২০১৯ সালের ৩১ অগস্ট বৌবাজারে দুর্ঘটনায় পড়ে। ওই ঘটনার জেরে বৌবাজার এলাকার একাধিক বাড়ি ভেঙে পড়ে। শেষে সুড়ঙ্গে ধস আটকাতে সেখানে জল ভর্তি করে টিবিএমের পিছনে দেওয়াল তুলে দেওয়া হয়। দীর্ঘ পাঁচ মাস কাজ বন্ধ থাকার পরে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের কাজ বন্ধ রেখে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের কাজ শুরু হয়। গত অক্টোবর মাসে তা সম্পূর্ণ হয়।

Advertisement

টিবিএম উর্বীকেই এর পরে শিয়ালদহ থেকে তুলে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে লাগানো হয়। এ বার বৌবাজার অভিমুখে ছোটা শুরু করে সে। এ দিন সেই কাজই সম্পূর্ণ হয়েছে।

বর্তমানে চণ্ডীকে উদ্ধারের জন্য ৪০ মিটার দীর্ঘ, ১০ মিটার প্রশস্ত এবং প্রায় ২০ মিটার গভীর একটি চৌবাচ্চা তৈরি করা হচ্ছে। এর জন্য এক মিটার পুরু কংক্রিটের চারটি ডায়াফ্রাম ওয়াল মাটিতে ঢোকানো হয়েছে। তারও বাইরে বৌবাজার থেকে শিয়ালদহের দিকে ওই দেওয়ালের আড়াই মিটার দূরে সাপোর্ট পাইল বসানো হয়েছে। এ দিন টিবিএম ওই সাপোর্ট পাইল কেটে ডায়াফ্রাম ওয়ালের ধারে এসে থেমেছে। এ প্রসঙ্গে এক আধিকারিক বলেন, ‘‘চৌবাচ্চা তৈরি হলে ভিতর থেকে দেওয়াল খানিকটা ভেঙে টিবিএমের পথ করা হবে। তার পরে টিবিএম প্রায় ৫০ সেন্টিমিটার দেওয়াল উল্টো দিক থেকে কাটলেই চৌবাচ্চার মতো পরিসরে শিয়ালদহ এবং এসপ্লানেড থেকে আসা সুড়ঙ্গ জুড়ে যাবে।’’ তবে বিভিন্ন ধাপে চণ্ডীকে উদ্ধারের পরে ওই কাজ সম্পূর্ণ হতে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন