বর্ষা যায়, বর্ষা আসে। কিন্তু জমা জলে হাওড়াবাসীর নাস্তানাবুদ হওয়ার চেনা ছবিটা বদলায় না। জল জমার জন্য কারা দায়ী, তা নিয়ে রেলের সঙ্গে পুরসভার চাপান-উতোরও চলছে বহুদিন ধরে। তবু সমাধানসূত্র বার হয়নি এখনও। এ বছর সেই জল-ছবিটা বদলাতে পূর্ব রেল, মেট্রো রেল ও হাওড়া পুরসভাকে নিয়ে তৈরি হল টাস্ক ফোর্স।
জল জমা থেকে হাওড়া ও সংলগ্ন অঞ্চলকে মুক্তি দিতে এই টাস্ক ফোর্স স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করে স্থায়ী সমাধানের পথ খুঁজবে। সোমবার হাওড়া পুরসভায় আয়োজিত একটি বৈঠকে তিনটি সংস্থার কর্তাদের উপস্থিতিতে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে ছিলেন মেয়র রথীন চক্রবর্তী, ডিআরএম আর বদ্রিনারায়ণ, কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বনাথ দেওয়ানজি, মেয়র পারিষদ (উদ্যান) বিভাস হাজরা-সহ পুর ও রেলের অন্য আধিকারিকেরা।
হাওড়া রেল ইয়ার্ড সংলগ্ন ওয়ার্ডগুলিতে নিকাশির সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি মেয়র পারিষদের (উদ্যান) নেতৃত্বে পুরসভা ও রেলের ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে যৌথ ভাবে সমীক্ষা চালান দুই ও তিন নম্বর বরোর চেয়ারম্যান। ওই সমীক্ষার পরে পুরসভার তরফে হাওড়া পুর এলাকায় জল জমার অন্যতম কারণ হিসেবে রেলের নিকাশি ব্যবস্থাকে দায়ী করে ডিআরএম-কে একটি রিপোর্টও দেওয়া হয়। পাশাপাশি, ওই সমস্যার মোকাবিলায় যৌথ ভাবে উদ্যোগী হতে রেলের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়। এর পরেই এ দিন পুরসভায় ওই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক বসে।
পুরসভা সূত্রে খবর, এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ছয় সদস্যের ওই টাস্ক ফোর্স হাওড়ার রেল ইয়ার্ডের নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার-সহ রেল ইয়ার্ড সংলগ্ন চারটি ওয়ার্ডের নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে। বৈঠকে মেট্রো রেলকে বলা হয়েছে, অবিলম্বে হাওড়া ময়দান সংলগ্ন কেলভিন কোর্টে রেলের আবাসনে জমা জলের সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে এবং রানিঝিল-সহ রেল ইয়ার্ডের মূল নিকাশি নালা থেকে অবিলম্বে পাঁক তোলার ব্যবস্থা করতে।
বৈঠকের পরে হাওড়ার মেয়র বলেন, ‘‘এই প্রথম কোনও ডিআরএম পুরসভায় এসে নিকাশি সমস্যা মেটাতে বৈঠক করলেন। আসা করা যায়, বর্ষায় জমা জলের সমস্যা অনেকটা মিটবে।’’ ডিআরএম বলেন, ‘‘এর মোকাবিলা করতে পরস্পরের মধ্যে সমঝোতা ও একটি পরিপূর্ণ পরিকল্পনা প্রয়োজন ছিল। তাই তিনটি সংস্থাকে নিয়েই টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হয়েছে। শীঘ্র কাজ শুরু হবে।’’