বেলেঘাটা-সহ কলকাতার বেশ কয়েকটি জায়গায় ইডি হানা। — ফাইল চিত্র।
পুরসভা নিয়োগ মামলায় আবার সক্রিয় ইডি। মঙ্গলবার সকাল থেকে বেলেঘাটা-সহ কলকাতার বেশ কয়েকটি জায়গায় হানা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। দিনকয়েক আগে এই পুর-নিয়োগ মামলার সূত্র ধরেই মন্ত্রী সুজিত বসুর অফিসে এবং তাঁর পুত্রের রেস্তরাঁয় হানা দিয়েছিল ইডির দল। শুধু তা-ই নয়, তার পরে দক্ষিণ দমদম পুরসভার এক আধিকারিককে তলব করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।
ইডির এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বেলেঘাটার হেমচন্দ্র নস্কর রোডের এক বাসিন্দার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি এই পুরনিয়োগ দুর্নীতি মামলার সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকটি কোম্পানির হদিস পায় ইডি। সেই সূত্র ধরেই বেলেঘাটায় হানা দেয় তারা। বিশ্বজিৎ এবং রঞ্জিত চৌধুরী— দুই ভাই থাকেন ওই বাড়িতে। দু’জনেই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তবে সেই ব্যবসার সঙ্গে পুরনিয়োগ দুর্নীতির কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। শুধু বেলেঘাটা নয়, কলকাতার আরও কয়েকটি জায়গাতেও মঙ্গলবার সকাল থেকে অভিযান চালায় ইডি।
সম্প্রতি কলকাতা এবং আশপাশের ১৩ জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। তার মধ্যে ছিল দমকলমন্ত্রী সুজিতের দফতর এবং তাঁর পুত্রের ধাবাও। শহরের ১৩টি জায়গায় তল্লাশিতে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল নগদ ৪৫ লক্ষ টাকা এবং নথিপত্র। সেই নগদ নিয়ে অবশ্য কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি। সুজিতের দফতর বা সংস্থা থেকে কোনও টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কি না, বা করলে কত পরিমাণে, তারও কোনও উল্লেখ ছিল না ইডির বক্তব্যে। তার পরেই দক্ষিণ দমদম পুরসভার এক আধিকারিককে তলব ইডি দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা।
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ব্যবসায়ী অয়ন শীলকে প্রথম গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। পরে তাঁর সল্টলেকের অফিসে তল্লাশি চালাতে গিয়ে উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট। সেখান থেকেই পুরসভার নিয়োগেও দুর্নীতির হদিস পান তদন্তকারীরা। অয়নের সংস্থা পুর নিয়োগের ক্ষেত্রে ওএমআরের দায়িত্বে ছিল। তদন্তে নেমে একে একে আরও অনেককে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। পরে এই মামলায় অবৈধ ভাবে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্তে নামে ইডিও।
ইডির পাশাপাশি এই মামলায় তদন্ত করছে সিবিআই। গত বছর এই মামলায় প্রথম চার্জশিট দেয় সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতিতে কী ভাবে টাকা লেনদেন হত, সেই চার্জশিটে তার হদিস দিয়েছিল তারা। পাশাপাশি, কী ভাবে চাকরি পাওয়া যেত, তার উল্লেখ করা হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, কোন কোন এজেন্টদের মাধ্যমে টাকার লেনদেন হত, তা-ও জানিয়েছিল সিবিআই। পরে এই মামলায় অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। তার মধ্যেই আবার পুর নিয়োগ নিয়োগ মামলায় তৎপর ইডি।