বৃদ্ধার গলায় কোপ চোরের

স্থানীয় সূত্রের খবর, পুলিশ তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে গেলে এলাকার আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, গত কয়েক দিন ধরেই ওই এলাকায় নানা রকম অসামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৮ ০৩:০৯
Share:

নিজের ঘরে ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন আহত আরতি ঘোষ। নিজস্ব চিত্র

ঘরের মধ্যে দুষ্কৃতীকে দেখেই চিৎকার করে উঠেছিলেন ৬২ বছরের বৃদ্ধা। অভিযোগ, তাঁর মুখ চেপে ধরে খাট থেকে মেঝেতে ফেলে দেয় ওই দুষ্কৃতী। এর পরে গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে চম্পট দেয় ওই দুষ্কৃতী। রবিবার শেষ রাতের ঘটনায় আতঙ্কিত দমদম থানার বাদড়ার বাসিন্দা আরতি ঘোষ। চিকিৎসকেরা জানান, বৃদ্ধার ক্ষতস্থানে তিনটি সেলাই পড়েছে। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে তাঁর গলার স্বরতন্ত্রী অর্থাৎ, ভোকাল কর্ড।

Advertisement

বাদড়ার সুকান্ত সরণির সেকেন্ড লেনের বাড়ির দোতলায় ছেলে আশিস ঘোষের সঙ্গে থাকেন আরতিদেবী। একতলায় দেওর উত্তম ঘোষের পরিবার থাকে। দোতলায় চারটি ঘরের মধ্যে দু’টি ফাঁকাই থাকে। মেয়ে তামসী বসু বিয়ের পর থেকে মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা। দোতলার একটি ঘরে আরতিদেবী এবং উল্টো দিকের ঘরে তাঁর ছেলে থাকেন। বৃদ্ধা জানান, রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ সদর দরজার কোল্যাপসিবল গেট ভেঙে সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় ওঠে দুষ্কৃতী। দোতলাতেও একটি কোল্যাপসিবল গেট রয়েছে। সেটিও ভাঙা হয়। এর পরে ছেলের ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে বৃদ্ধার ঘরে ঢোকে ওই দুষ্কৃতী।

আরতিদেবী জানান, আলমারি খোলার চেষ্টা করলে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। বৃদ্ধা বলেন, ‘‘খাট থেকে আলমারির দূরত্ব খুব বেশি নয়। আমি ‘কে, কে’ বলে চিৎকার করলে ওই দুষ্কৃতী আমার মুখ চেপে ধরে। দমবন্ধ হয়ে আসছিল। প্রাণপণে মুখ থেকে হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছি দেখে আমাকে খাট থেকে মেঝেতে ফেলে দেয়। তার পরে গলায় কী একটা দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে গেল। ওই অবস্থায় ছেলের ঘরের দরজা খুলি। তখনও বুঝিনি পরনের শাড়ি রক্তে ভিজে রয়েছে।’’ বৃদ্ধার মেয়ে তামসী জানান, সকালে বাদড়ায় এসে তিনি দেখেন, মায়ের ঘর থেকে ভাইয়ের ঘরের দরজা পর্যন্ত রক্তের দাগ।

Advertisement

আরতিদেবীর কথায়, ‘‘কী ভাবে যে লড়াই করেছি! ভাগ্যিস ঘরের আলো জ্বলছিল না। মুখ দেখে নিলে তো আমাকে প্রাণেই মেরে দিত! রাতের কথা মনে পড়লেই শিউরে উঠছি।’’ সকালে দমদম পুর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য মাকে নিয়ে যান তামসী। ডান হাতে এবং পায়ে ব্যথা রয়েছে। ব্যথা না কমলে এক্স-রে করানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। হাসপাতাল থেকে ফেরার পথে দমদম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বৃদ্ধা।

স্থানীয় সূত্রের খবর, পুলিশ তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে গেলে এলাকার আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, গত কয়েক দিন ধরেই ওই এলাকায় নানা রকম অসামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দমদম থানা। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ঘরের নকশা ভাল করে জানে এমন কেউ বা কারা এই ঘটনায় জড়িত। কিছু দিন আগে ওই বাড়িতে রঙের কাজ হয়েছিল। তদন্তে সেই বিষয়টি উঠে এসেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন