ক্ষতিপূরণ চাই, আর্জি বিস্ফোরণে মৃতদের পরিবারের

গত ২ অক্টোবর, গাঁধী জয়ন্তীর দিন সকালে আচমকা বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে দমদমের কাজিপাড়া মোড়। ঘটনার দিনই আট বছরের বালক বিভাস ঘোষের মৃত্যু হয়। পরবর্তী ক্ষেত্রে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় অজিত এবং শরতের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০২:২৯
Share:

বিস্ফোরণের পরে ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক বিষেশজ্ঞ।—ফাইল চিত্র।

বিস্ফোরণের ক্ষতিপূরণ হবে কী ভাবে! দমদমের কাজিপাড়া-কাণ্ডের দেড় মাস পরে এই প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন বিস্ফোরণে মৃত ফলবিক্রেতা অজিত হালদার ও ধোপা শরৎ শেঠির স্ত্রী। বৃহস্পতিবার সে প্রশ্নের উত্তর পেতে দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান তথা কাজিপাড়ার তৃণমূল কাউন্সিলরের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শেফালি হালদার এবং স্বর্ণলতা শেঠি নামে ওই দু’জন।

Advertisement

গত ২ অক্টোবর, গাঁধী জয়ন্তীর দিন সকালে আচমকা বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে দমদমের কাজিপাড়া মোড়। ঘটনার দিনই আট বছরের বালক বিভাস ঘোষের মৃত্যু হয়। পরবর্তী ক্ষেত্রে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় অজিত এবং শরতের। এ দিন শরতের স্ত্রী স্বর্ণলতা জানান, ওড়িশার জাজপুরের বাড়িতে দুই মেয়ে এবং ছেলেকে নিয়ে থাকতেন তিনি। স্বামী শরৎ এখানে রোজগার করে যে টাকা পাঠাতেন, তাতে তাঁদের সংসার চলত। বড় মেয়ে হরপ্রিয়া শেঠি দ্বিতীয় বর্ষের কলেজ ছাত্রী। ছোট মেয়ে

লক্ষ্মীপ্রিয়া অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছোট ছেলে কমলাকান্ত শেঠির মাত্র দশ বছর বয়স। স্বর্ণলতা বলেন, ‘‘দু’বেলা খাবার কী ভাবে জুটবে, তার ঠিক নেই। এর মধ্যে দুই মেয়ে ও ছেলের পড়াশোনা চালাব কী করে? বড় মেয়ের চাকরি হলে খুব ভাল হয়।’’ চাকরির দাবিতে এ দিন চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেন শেফালিও।

Advertisement

তবে আর্থিক সমস্যার স্থায়ী সমাধানের পাশাপাশি বিস্ফোরণে ক্ষতিপূরণ নিয়েও সরব শেফালি এবং স্বর্ণলতা। শেফালি বলেন, ‘‘ফল বিক্রি করতে এসে বেঘোরে আমার স্বামীর প্রাণ গেল। দোষীদের কাউকে তো এখনও ধরতে পারেনি সিআইডি!’’ স্বর্ণলতা বলেন, ‘‘যারা এ কাজ করল, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু সে রকম তো কিছু শুনছি না।’’

বস্তুত, দমদমের মতো ব্যস্ত এলাকায় কারা বিস্ফোরক আনল, তাদের উদ্দেশ্য কী, কোনও প্রশ্নের এখনও উত্তর মেলেনি। সিআইডি সূত্রের খবর, স্থানীয় দুষ্কৃতীদের পাশাপাশি কাজিপাড়া অঞ্চলের বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন গোয়েন্দারা। এক তৃণমূল কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির দল নমুনা সংগ্রহ করেছিল। তার চূড়ান্ত রিপোর্ট এখনও আসেনি বলে খবর। তবে প্রাথমিক রিপোর্টে শক্তিশালী বিস্ফোরকের উপস্থিতি মিলেছে বলে ভবানী ভবন সূত্রে খবর। বিস্ফোরণের কারণ জানতে বিধাননগর কমিশনারেট এলাকার ঘটনাপ্রবাহের উপরেও গোয়েন্দাদের নজর রয়েছে। এ দিন চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি ম়ৃতদের পরিজনেদের অন্য ভাবেও সাহায্য করা যায় কি না, তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন