পছন্দ নয় ভুঁড়ি, নির্মেদ পুলিশ চাইছে ফিফাও

সেই ভুঁড়ির ‘খ্যাতি’ এতটাই যে, ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা ফিফা-র কর্তারাও সন্দিগ্ধ স্থূলদেহী পুলিশের কর্মক্ষমতা নিয়ে! তাই সল্টলেক স্টেডিয়ামে যুব ফুটবল বিশ্বকাপে ভুঁড়িহীন ও নির্মেদ চেহারার পুলিশকর্মীদের চেয়েছেন তাঁরা!

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৭ ০১:৩৬
Share:

অঙ্কন: কুণাল বর্মণ

পেল্লায় ভুঁড়ি নিয়ে পুলিশ কী করে চোর ধরবে, সে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতিরা! এ বার জানা গেল, সেই ভুঁড়ির ‘খ্যাতি’ এতটাই যে, ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা ফিফা-র কর্তারাও সন্দিগ্ধ স্থূলদেহী পুলিশের কর্মক্ষমতা নিয়ে! তাই সল্টলেক স্টেডিয়ামে যুব ফুটবল বিশ্বকাপে ভুঁড়িহীন ও নির্মেদ চেহারার পুলিশকর্মীদের চেয়েছেন তাঁরা!

Advertisement

আগামী অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে শুরু হচ্ছে যুব ফুটবল বিশ্বকাপ। কলকাতায় হবে মোট ন’টি ম্যাচ। ফিফা-র ইচ্ছে, ওই সমস্ত ম্যাচে মাঠে ও গ্যালারিতে নিরাপত্তার দায়িত্বে রাখা হোক নির্মেদ চেহারার পুলিশকর্মীদের। এর জন্য রাজ্য পুলিশের বিভিন্ন বাহিনী থেকে প্রায় দুশো জনকে বাছা হয়েছে। তাঁদের বিশ্বকাপের আগে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

যুব বিশ্বকাপের জন্য ইতিমধ্যেই ভোল পাল্টে ফেলা হয়েছে সল্টলেক স্টেডিয়ামের। সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও আমূল বদলানো হচ্ছে। বিশ্বকাপ চলাকালীন নিরাপত্তার বিশেষ কিছু ব্যবস্থা করতে ফিফার তরফে পুলিশকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর, স্টেডিয়ামের নিরাপত্তার প্রধান দায়িত্ব থাকছে বিধাননগর পুলিশের হাতে। সম্প্রতি নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠকের পরে ফিফা-র তরফে পেটানো স্বাস্থ্যের পুলিশকর্মীদের চাওয়া হয়। সেই মতো বাহিনী থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় দুশো জনকে বাছাই করা হয়েছে। এঁরা প্রত্যেকেই সুঠাম এবং আকর্ষণীয় চেহারার অধিকারী। খেলা চলাকালীন মাঠের ধারে কত জন পুলিশকর্মী থাকবেন, তা চূড়ান্ত না হলেও বিদেশের মতো তাঁরা গ্যালারির দর্শকদের দিকে তাকিয়ে থাকবেন বলে পুলিশের একাংশ জানিয়েছে। সেই সঙ্গে গ্যালারিতে থাকা পুলিশকর্মীরাও নজরদারি চালাবেন। পুলিশ জানিয়েছে, ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা পার করেই দর্শকদের গ্যালারিতে প্রবেশ করতে হবে। শুধু তা-ই নয়, দর্শকদের উপরে নজরদারি এবং নিরাপত্তার স্বার্থে উন্নত মানের প্রায় ২৩৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে পুরো স্টেডিয়াম জুড়ে। যা স্টেডিয়ামে থাকা কন্ট্রোল রুম থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পুলিশকর্তাদের মতে, ওই ক্যামেরায় চার দিকের অনেক ছোটখাটো ঘটনাও নজরে রাখা যাবে। এ ছাড়া, দু’হাজারেরও বেশি পুলিশকর্মীকে মাঠের চার দিকে মোতায়েন করা হবে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, দর্শকদের সঙ্গে নমনীয় ভাবে কথা বলাটাও আবশ্যিক। সেই জন্য সুঠাম চেহারার পাশাপাশি যাঁদের জনসংযোগ ভাল, তাঁদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে মাঠের নিরাপত্তার স্বার্থে। এর জন্য বিশেষ ক্লাস নেবেন রাজ্য পুলিশের কর্তারা। নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘বিশ্বকাপের খেলা দেখতে মাঠে বিদেশি দর্শকদের সমাগম বেশি হওয়ার কথা। তাই তাঁদের কথা ভেবে ওই বাহিনীর সদস্যদের ভাষাগত প্রশিক্ষণও দেওয়া হতে পারে।’’

পুলিশ জানায়, নতুন চেহারার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আসন-সংখ্যা ৬৫ হাজার। আটটি গেট। ১২টি ব্লক। রয়েছে ভিভিআইপি ব্লকও। প্রতিটি গেট ও ব্লকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার অফিসারেরা। এ ছাড়াও, যুবভারতীতে খেলার সময়ে ডিউটি করেছেন, এমন অভিজ্ঞ আইপিএস অফিসারদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাঁদের যুব বিশ্বকাপের সময়ে ডাকা হবে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, তিরিশ জনেরও বেশি আইপিএস অফিসার যুবভারতীতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement