আবার শহরে আগুন লাগরা ঘটনা। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
শহরে পর পর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেই চলেছে। বেহালার এক ফ্ল্যাটবাড়িতে রবিবার দুপুরে আগুন লাগে। জেমস লং সরণিতে রয়েছে সেই ফ্ল্যাটবাড়ি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় দমকলের তিনটি ইঞ্জিন। কোনও হতাহত হয়নি বলে খবর। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। গত রবিবার সন্ধ্যায় সখেরবাজারে এই জেমস লং সরণিতেই একটি নার্সিং হোমে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছিল। দমকলের একটি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। গত কয়েক দিনে শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় পর পর আগুন লাগার ঘটনা ঘটল। তার পরেই প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা নিয়ে।
দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুর ৩টে নাগাদ জেমস লং সরণির ওই ফ্ল্যাটবাড়িতে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় দমকলের একটি ইঞ্জিন। পরে আরও দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছোয়। ফ্ল্যাটবাড়ি থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদে বার করে আনা হয়।
স্বল্প সময়ের ব্যবধানে শহরে বেশ কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। গত মঙ্গলবার কলকাতার বড়বাজারের একটি হোটেলে আগুন লাগে। তাতে প্রাণ
হারান ১৪ জন। তার পরেই কলকাতার এই হোটেলের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ
উঠেছে। হোটেলের মালিক এবং ম্যানেজারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। এর পরে গত শুক্রবার সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের একটি রাসায়নিক কারখানায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। বাইরে থেকে বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া যায়। প্রায় ঘণ্টা তিনেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন দমকর্মীরা। ঘটনাস্থলে ছিল দমকলের ১১টি ইঞ্জিন। ওই দিন রাতে নিউ টাউনের সেন্ট্রাল মলের অদূরে একটি সাইকেলের শোরুমে আগুন লেগে যায়। জায়গাটি সেন্ট্রাল মলের ঠিক পিছনে হওয়ায় মুহূর্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় দমকলের দু’টি ইঞ্জিন। প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
শনিবার দুপুরে কেষ্টপুরের একটি নাচের স্কুলে আগুন লাগে। ওই সময় স্কুলের একটি ঘরে নাচের ক্লাস চলছিল। সেখানে ছিলেন বেশ কয়েক জন পড়ুয়া। আগুন এবং ধোঁয়া দেখতে পেয়ে ওই পড়ুয়াদের বাইরে বার করে নিয়ে আসেন শিক্ষিকারা। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
শহরে পর পর এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই আবহে মেছুয়ার যে হোটেলে আগুন লেগেছিল, সেই এলাকা পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়। হোটেলের আশপাশের বেশ কিছু বাড়ির অবস্থা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। স্থানীয়দের সাবধানও করেন। তিনি বলেন, ‘‘কিছু জায়গায় অনেক প্লাস্টিক মজুত রয়েছে। কথা শোনে না। শুনতে হবে। আমি কারও বিরুদ্ধে নই। আপনারা ভাল থাকুন, আমি সেটাই চাই। এটা বলার জন্য আমাকে ভোট না-দিলে, না-দিন। চাই না। কিন্তু দয়া করে নিজেদের জীবন বাঁচান।” বড়বাজারের অগ্নিকাণ্ডের স্থল পরিদর্শনের পর সেখান থেকে সোজা পার্ক স্ট্রিট চত্বরে ‘সারপ্রাইজ় ভিজ়িটে’ যান মুখ্যমন্ত্রী। এই আবহে আবার শহরে আগুন লাগার ঘটনা হল।