Bagbazar Fire

গৃহহীনদের দায় নেবে প্রশাসন, বাগবাজারে বললেন মমতা

পুরসভা ও পুলিশ মিলে পাঁচ কেজি করে চাল, ডাল, আলু এবং বাচ্চাদের জন্য দুধ-বিস্কুট পৌঁছে দেবে। মেয়েদের দেওয়া হবে শাড়ি, বাচ্চা ও পুরুষদের জামা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২১ ১৩:১২
Share:

বাগবাজারে মমতা। নিজস্ব চিত্র

বাগবাজারে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া বস্তির গৃহহীন মানুষের থাকা-খাওয়ার দায়িত্ব নিল প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা, কলকাতার পুর প্রশাসক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, কলকাতা পুরবোর্ডের অন্যতম সদস্য অতীন ঘোষ, পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা প্রমুখ।

Advertisement

বুধবার রাতে বাগবাজারের ওই বস্তি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছেন প্রায় এক হাজার মানুষ। বৃহস্পতিবার সেই এলাকা পরিদর্শন করে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মমতা। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ‘‘কলকাতার পুরসভার পক্ষ থেকে আগের মতো সকলের জন্য বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। বুধবার আগুন লেগেছিল। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার এলাকা পরিষ্কার করা হবে। তারপর নতুন করে শুরু হবে বাড়ি তৈরির প্রক্রিয়া।’’

প্রসঙ্গত, বাগবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থলের কাছেই ‘উদ্বোধন’ পত্রিকার কার্যালয় এবং ‘মায়ের বাড়ি’। আগুনে সেটিরও আংশিক ক্ষতি হয়েছে। ভস্মীভূত বস্তি পরিদর্শন করে, এলাকার লোকের সঙ্গে কথা বলার পর মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেন ‘উদ্বোধন’-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত মহারাজের সঙ্গেও।

Advertisement

বুধবার থেকেই আবার শীত পড়তে শুরু করেছে শহরে। এর মধ্যেই আগুন লেগে সর্বস্ব হারিয়েছেন যাঁরা, তাঁরা আপাতত আশ্রয় নিয়েছেন বাগবাজার মহিলা কলেজে। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী সেখানে গিয়ে বলেন, ‘‘আমি গঙ্গাসাগরে ছিলাম। আগুন লাগার পর কলকাতা পুলিশ কমিশনার, এলাকার এমপি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠিয়েছিলাম। ববি (ফিরহাদ) ছিল গঙ্গাসাগরে। ওকেও পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। সকলের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করেছি আমরা। যতদিন না বাড়ি তৈরি হচ্ছে, ততদিন মহিলা কলেজেই থাকবেন আশ্রয়হীনরা।’’

আগুনের দাপটে প্রায় সবই পুড়ে গিয়েছে বস্তির বাসিন্দাদের। অধিকাংশ মানুষ এক কাপড়ে বেরিয়ে এসে কোনওমতে প্রাণে বেঁচেছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, পুরসভা ও পুলিশের পক্ষ থেকে আগামী বেশ কয়েকদিন অসহায় মানুষগুলির দেখভালের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভা ও পুলিশ মিলে পাঁচ কেজি করে চাল, ডাল, আলু এবং বাচ্চাদের জন্য দুধ-বিস্কুট পৌঁছে দেবে। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে মেয়েদের জন্য পাঁচটি করে শাড়ি দেওয়া হবে। দায়িত্বে থাকবেন শশী পাঁজা। ছেলেদের আর বাচ্চাদের দেওয়া হবে জামাকাপড়, কম্বল। দায়িত্বে থাকবেন ফিরহাদ হাকিম।’’ উপস্থিত জনতা মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করে, ‘‘রান্না করব কী করে!’’ ফিরহাদ বলেন, ‘‘কাউকে রান্না করতে হবে না। আমরা সকলকে খাওয়াব।’’ মমতা বলেন, ‘‘আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন। চিন্তার কোনও কারণ নেই। আমরা সকলে আপনাদের পাশে আছি।’’

মমতা বলেন, গঙ্গাসাগর থেকেই আগুন লাগার ঘটনা জানতে পেরে তিনি নিয়মিত প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী আসার আগে বাগবাজারে পুড়ে যাওয়া আশ্রয় থেকে নিজের শেষ সম্বলটুকু খুঁজে নিতে হাজির হচ্ছিলেন ওখানকার বাসিন্দারা। অনেকেরই গুরুত্বপূর্ণ নথি নষ্ট হয়েছে। তাঁরা খুঁজে দেখছিলেন যদি কিছু ফেরত পাওয়া যায়। বেলা ১২টা মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থলে চলে আসেন। তাঁকে দেখে এগিয়ে আসেন সর্বহারা সাধারণ মানুষ। তাঁরা নিজেদের অসহায়তার কথা বলতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: গৃহহীনরা কলেজে, ছাইয়ের গাদায় শেষ সম্বলের খোঁজ বাগবাজারে

আরও পড়ুন: ‘চোখের সামনেই রাক্ষুসে আগুনে সব শেষ’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন