লেলিহান: হাওড়ার আদালত ভবনে আগুন। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
পুড়ে ছাই হয়ে গেল হাওড়ার মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতের দোতলার সমস্ত ঘর। যার মধ্যে রয়েছে দু’টি এগ্জিকিউটিভ কোর্ট, ফার্স্ট ও সেকেন্ড কোর্ট, আদালতের রেকর্ড রুম ও সর্বশিক্ষা মিশনের অফিস। দমকল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ প্রথমে আগুন লাগে সর্বশিক্ষা মিশনের ঘরে। দ্রুত তা বাকি ঘরগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। দমকলের ১০টি ইঞ্জিন প্রায় তিন ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন নেভাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন এক দমকলকর্মী।
হাওড়া আদালতের একতলায় মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের ঘর। দোতলায় আদালত ও জেলা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ৬টি দফতর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সকাল ১০টা ২০ নাগাদ দোতলায় সর্বশিক্ষা মিশনের ঘর থেকে জোরালো শব্দ হয়। এর পরেই ঘর থেকে আগুন ও ধোঁয়া বেরোতে দেখেন তাঁরা। কর্মরত আইনজীবীদের দাবি, সর্বশিক্ষা মিশনের অফিসের এসি ফেটে আগুন লাগে। যদিও আগুনের কারণ রাত পর্যন্ত জানাতে পারেনি দমকল। তাদের বক্তব্য, আদালত ভবনের দোতলার ছাদ টিনের শেড দিয়ে তৈরি হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে। পুড়ে গিয়েছে আদালতের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ড।
এ দিন যেখানে আগুন লাগে, তার উল্টো দিকেই ক্রিমিনাল বার লাইব্রেরি-সহ মহকুমা শাসক ও অতিরিক্ত জেলাশাসকদের অফিস। খবর পেয়ে ছুটে আসেন জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী-সহ প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা। পৌঁছন দমকলের ডিজি জগমোহন। নামানো হয় পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স। এ দিকে, এ দিন মঙ্গলাহাট থাকায় ও আদালতের চারপাশে হাট বসায় প্রথমে দমকলের কাজে অসুবিধা হচ্ছিল। শেষে জেলাশাসকের নির্দেশে হাট উঠিয়ে দেয় পুলিশ।
দমকলের ডিজি বলেন, ‘‘আদালত ভবনটি বহু পুরনো। বিদ্যুতের লাইনে সমস্যা হতে পারে। তাই কী কারণে আগুন লেগেছে, বলা সম্ভব নয়। ওই ভবনে অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক ছিল কি না, তদন্ত করে দেখা হবে।’’ যদিও জেলাশাসকের দাবি, ‘‘অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা সবই ছিল। কিন্তু আগুন এত দ্রুত ছড়ায় যে সেগুলি ব্যবহার করার সময় পাওয়া যায়নি।’’
ক্রিমিনাল কোর্ট বার লাইব্রেরির সভাপতি কৃষ্ণকুমার চন্দ্র জানিয়েছেন, এই অগ্নিকাণ্ডের প্রতিবাদে আজ, বুধবার ক্রিমিনাল কোর্ট বার লাইব্রেরির পক্ষ থেকে এক দিনের প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করা হবে।