নমস্কার: বুধবার চেতলায় প্রচারে ফিরহাদ হাকিম। নিজস্ব চিত্র
প্রশ্নটা খুব সহজ। উত্তরটাও সম্ভবত অজানা নয়। কেবল সময়ের অপেক্ষা। তবুও চেতলায় কলকাতা পুরসভার ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের উপনিবার্চনে রীতিমতো ভোটযুদ্ধের পরিবেশ। কারণ, প্রার্থী যে স্বয়ং কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
পুর আইনে ছিল কলকাতা পুরসভার মেয়র হতে হলে অবশ্যই কাউন্সিলর হতে হবে। সম্প্রতি সেই আইন সংশোধন করা হয়েছে। তাতে বলা আছে, মেয়র পদে কেউ বসতেই পারেন, তবে তাঁকে ছ’মাসের মধ্যে কোনও ওয়ার্ড থেকে জিততে হবে। ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে অকাল নির্বাচন সে কারণেই। আর ফিরহাদকে ওই ওয়ার্ডে জায়গা দিতে সরে গিয়েছেন তাঁর প্রিয় ডাক্তারবাবু কাউন্সিলর প্রণব বিশ্বাস। আগামী ৬ জানুায়ারি ভোট। মূলত চতুর্মুখী লড়াই। তৃণমূল ছাড়া প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি, বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসও।
জেতা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হলেও প্রচারে এতটুকু কাপর্ণ্য করছেন না ভোটপ্রার্থী ফিরহাদ (ববি) হাকিম। তবে চেতলার বস্তির মানুষ থেকে অট্টালিকাবাসীরাও দরজায় তাঁকে দেখে বলছেন, ‘আপনি মন্ত্রী। মেয়রও। ব্যস্ত মানুষ। অনেক কাজ করতে হয়। নিশ্চিন্তে থাকুন। আসার দরকার নেই।’ তবুও মাটি ছাড়তে নারাজ চেতলাবাসী ববি। তিনি বললেন, ‘‘ছোট থেকে বড় হয়েছি এখানে। দলনেত্রীর সৈনিক হিসেবেই কাউন্সিলর থেকে মন্ত্রী, এখন মেয়র। জয় নিশ্চিত জানি। তবুও এলাকাবাসীর আশীর্বাদ নিতে যেতে তো হবেই।’’
চেতলা হাট রোড, রাখালদাস আঢ্য রোড, দুর্গাপুর সেতু সংলগ্ন বস্তি থেকে শুরু করে অভিজাত আলিপুর এলাকাতেও নজরে পড়ল তৃণমূল প্রার্থী ববি হাকিমের লম্বা লম্বা কাটআউট, ব্যানার, দলীয় পতাকা-সহ ছয়লাপ পোস্টারে। তুলনায় বাকি তিন
দলের প্রচার অনেকটাই স্তিমিত। তারই মধ্যে কিছুটা এগিয়ে বিজেপি। তাদের প্রার্থী জীবনকুমার সেন। তিনি বললেন, ‘‘২০১৫ সালে বিজেপি এখানে দ্বিতীয় হয়েছিল। ভোট অবাধ হলে জোর লড়াই দেব।’’ আর বামফ্রন্টের হয়ে প্রার্থী হয়েছেন সিপিআই-এর শিশিরকুমার দত্ত। প্রচারে পিছিয়ে থাকলেও কথার ঝাঁঝ কম নয়। তিনি বললেন, ‘‘গত বারের থেকে আরও ভাল করব।’’ কারণ জানতে চাইলে তাঁর বক্তব্য, ‘‘একটি দল নিজেদের কাউন্সিলরদের ভিতর থেকে কাউকে মেয়র করতে পারল না। এটা মানুষ ভাল চোখে দেখছেন না।’’ কংগ্রেস প্রার্থী অনিমেষ ভট্টাচার্যও বুঝেছেন লড়াইটা শক্ত।
ওয়ার্ডের ভোটার প্রায় সাড়ে ৩৩ হাজার। ২০১০ সালে ববি জিতেছিলেন ১০ হাজারেরও বেশি ব্যবধানে। তিনি মন্ত্রী হওয়ায় ২০১৫ সালে পুরভোটে তৃণমূল প্রার্থী প্রণববাবু জিতেছিলেন ৮ হাজারেরও বেশি ভোটে।
বুধবার ফিরহাদ হাকিমের সমর্থনে টালিগঞ্জ এবং যাদবপুর এলাকার ১৪ জন দলীয় কাউন্সিলরকে নিয়ে এক মহা মিছিলে যোগ দেন রাজ্যের আর এক মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বিকেলে চেতলা পার্কে মিছিল শেষ করে ববি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য জুড়ে কর্মযজ্ঞ চলছে। চেতলার মানুষও তা জানেন এবং তার শরিক হতে চান।’’ তৃণমূলের মিছিলের পরেই বিজেপি এবং বামফ্রন্টও ওই ওয়ার্ডে জনসমাবেশ করে। ভোট বলে কথা!