অবতরণের বিপদ এড়িয়ে অল্পের জন্য রক্ষা বিমানের

মাটি থেকে মাত্র ২০০ ফুট উপরে ছিল বিমানটি। আর তখনই কলকাতা বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) অফিসার বুঝতে পারেন ভুল রানওয়েতে নেমে আসছে সেই বিমান। মুখ ঘুরিয়ে আবার আকাশে উড়ে যেতে বলা হয় পাইলটকে। কলকাতার মাথায় এক চক্কর কেটে একটু পরেই ঠিক জায়গায় নেমে আসে বিমানটি। এড়ানো যায় অনিবার্য দুর্ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৪ ০০:০২
Share:

মাটি থেকে মাত্র ২০০ ফুট উপরে ছিল বিমানটি। আর তখনই কলকাতা বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) অফিসার বুঝতে পারেন ভুল রানওয়েতে নেমে আসছে সেই বিমান। মুখ ঘুরিয়ে আবার আকাশে উড়ে যেতে বলা হয় পাইলটকে। কলকাতার মাথায় এক চক্কর কেটে একটু পরেই ঠিক জায়গায় নেমে আসে বিমানটি। এড়ানো যায় অনিবার্য দুর্ঘটনা।

Advertisement

বুধবার সকাল। কলকাতার প্রধান রানওয়ে বন্ধ করে তখন রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছিল। সেখানে তখন পিচ ঢেলে ভরাট করা হচ্ছিল ছোট ছোট গর্ত। কয়েকটি গাড়ি, অনেকগুলি বড় বড় যন্ত্র এবং বেশ কয়েক জন কর্মী-অফিসার উপস্থিত রানওয়েতে। বিমানটি সেই রানওয়ের উপরেই নেমে আসছিল। ঘটনাটি এটিসি অফিসারের চোখ এড়িয়ে গেলে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। ব্যাঙ্কক থেকে আসা ওই বোয়িং ৭৬৭ বিমানে সওয়া দু’শো জন যাত্রী ধরে। তবে এ দিন নামার সময়ে সেটি ফাঁকাই ছিল।

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ বিরাটির দিক থেকে বিমানটি নেমে আসছিল। কলকাতা বিমানবন্দরের এটিসি মনিটরে তার গতিবিধির উপরে নজর রাখা হচ্ছিল। কিন্তু যে ভাবে বিমানটি নামছিল, তা দেখে সন্দেহ হয় অফিসারদের। কলকাতায় পাশাপাশি সমান্তরাল দুই রানওয়ে আছে। প্রধান রানওয়ে সকাল দশটা থেকেই বন্ধ। সে কথা কলকাতায় নামা-ওঠা করা সব পাইলটেরই জানার কথা। ব্যাঙ্কক থেকে আসা এই বিমানের পাইলটও তা জানতেন। বাঁ দিকে প্রধান রানওয়েতে না নেমে ফলে তাঁর ডান দিকের দ্বিতীয় রানওয়েতেই তাঁর বিমান নামানোর কথা। কিন্তু এটিসি-র মনিটরে দেখা যায়, বিমানটি যেন বাঁ দিক ঘেঁষেই নেমে আসছে। কলকাতা থেকে মাত্র দুই নটিক্যাল মাইল দূরে বিমানটি তখন ২০০ ফুট উপরে। সঙ্গে সঙ্গে পাইলটকে যোগাযোগ করা হয়। এর পরেই মুখ ঘুরিয়ে বিমানটি নিয়ে ফের উড়ে যান পাইলট। বিমানবন্দরের এক অফিসারের কথায়, “আর ১০০ ফুট নীচে নেমে এলে বিমানটিকে ও ভাবে উপরে ওঠানো সম্ভব না-ও হতে পারত। বিমানটি যাত্রী বোঝাই থাকলেও সমস্যা হত। যাত্রী না থাকায় অত বড় বিমানটির মুখ ঘুরিয়ে উপরে তুলে নেওয়া সম্ভব হয়েছে।”

Advertisement

জানা গিয়েছে, এই বিমানটি ডায়নামিক নামের একটি সংস্থার। সেটি ব্যাঙ্ককের অন্য সংস্থাকে ভাড়া দেওয়া ছিল। এ দিন তাই বিমানটি সেখান থেকে উড়ে কলকাতায় আসে। জানা গিয়েছে, ডায়নামিকের কাছ থেকে মোট তিনটি বিমান ভাড়া নিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। এই তিনটি বিমানে করে হজ যাত্রীদের নিয়ে যাতায়াত করা হচ্ছে। মঙ্গলবার থেকে এক-এক করে তিনটি বিমান আসতে শুরু করে। যে বিমানটি ভুল রানওয়েতে নামছিল, তা ছিল তৃতীয়।

এ দিকে, হজ যাত্রীদের নিয়ে যাওয়ার প্রথম দিন থেকেই গণ্ডগোল বেধে গিয়েছে বিমানবন্দরে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে শুরু হয়েছে হজ যাত্রা। প্রতিদিন তিনটে করে বিমান যাওয়ার কথা। কিন্তু বুধবার রাত পর্যন্ত বিমানে জায়গা না পেয়ে বেশ কিছু যাত্রী রাতে বিক্ষোভ দেখান বিমানবন্দরে। হজ কমিটির সদস্য খলিল আহমেদের দাবি, “এয়ার ইন্ডিয়া বড় বিমান দেবে বলে ঠিক ছিল। তাই প্রথম উড়ানটির জন্য ২৬৫ টিকিট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বড় বিমানের ব্যবস্থা হয়নি। তাই এই সমস্যা।” অতিরিক্ত বিমান জোগাড় করে আটকে পড়া যাত্রীদের পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন