আবার শুরু হবে কাজ। ছবি: অরুণ লোধ
বেহালার ব্যানার্জিপাড়ায় টালিনালার উপরে ফুটব্রিজের নকশা বদলে রাজি হল রাজ্য সেচ দফতর। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি মেনে এই পরিবর্তন বলে সেচ দফতর জানিয়েছে। ফুটব্রিজটি যে ভাবে
তৈরি হচ্ছিল তাতে নিকাশিতে সমস্যা হচ্ছিল বলে বাসিন্দাদের একাংশ অভিযোগ করেছিলেন।
রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই প্রকল্পটি অনেক দিন আগেই নেওয়া হয়েছিল। কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু তার পরেই স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের প্রতিবাদে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। নকশা পরিবর্তন করে এই কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
এই ফুটব্রিজটি কলকাতা পুরসভার ১১৫ এবং ৯৭ নম্বর ওয়ার্ডকে সংযোগ করবে। কুঁদঘাটের ব্যানার্জিপাড়া থেকে টালিগঞ্জের নানুবাবুর বাজার যাওয়ার জন্য টালিনালার উপরে এই সেতুটি খুবই দরকারি। না হলে ব্যানার্জিপাড়া থেকে অনেক ঘুরে করুণাময়ী সেতু হয়ে টালিগঞ্জে আসতে হয়। এখানে একটি পুরনো ফুটব্রিজ ছিল। কিন্তু সেটির অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। বছর দুয়েক আগে এখান থেকে পড়ে গিয়ে স্থানীয় এক যুবক আহতও হয়েছিলেন। ঘটনার পরে এই এলাকার বিধায়ক এবং কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, ৯৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। যোগাযোগ করা হয় সেচ দফতরের সঙ্গে। সিদ্ধান্ত হয়, সেচ দফতর নতুন করে একটি ফুটব্রিজ তৈরি করবে। যত দিন না নতুন ফুটব্রিজ তৈরি হচ্ছে তত দিন এই ফুটব্রিজের পাশেই কাজ চালানোর জন্য একটি কাঠের সেতু তৈরি করে দেওয়া হয়।
সেচ দফতরের এক আধিকারিকের অভিযোগ, আর্চের মতো নকশার এই ফুটব্রিজের কাজ শুরুর পরেই বাধা দেন এলাকার বাসিন্দাদেরই একাংশ। তাঁদের অভিযোগ ছিল, এ ভাবে ফুটব্রিজ তৈরি হলে টালিনালা সঙ্কীর্ণ হয়ে যাবে। খালের ভেতর থেকে সেতুর স্তম্ভ তৈরি হওয়ায় আবর্জনা আটকে যাচ্ছে। তা ছাড়া ফুটব্রিজটির যে উচ্চতায় তৈরি করা হচ্ছে তাতে জোয়ার এলেই সেটি ডুবে যাবে বলেও বাসিন্দাদের আশঙ্কা ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “খালের ধারে যেখানে এই ফুটব্রিজ তৈরি হচ্ছে সেখানে আবর্জনা জমে যাওয়ায় প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।”
প্রথম দিকে সেচ দফতর অনড় ছিল। টানা-পড়েনে কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। রাজীববাবু জানান, খালধারের পাশের জমিতে কোনও কাঠামো তৈরি করা সম্ভব ছিল না। কারণ, এই অংশের জমি মেট্রো রেলকর্তৃপক্ষের। সেই কারণেই টালিনালার ভেতরের সামান্য অংশ নিয়ে ফুটব্রিজের কাঠামো তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। অন্য দিকে, বিকল্প হিসেবে টালিনালার মধ্যে স্তম্ভ তৈরি করলে খালের নাব্যতা কমে খাল মজে যেতে পারে। ইতিমধ্যেই মেট্রোরেলের জন্য এই খালের উপরে অনেক থাম রয়েছে। সেই কারণেই টালিনালার ভেতরে আর্চের মত নকশা করে ফুটব্রিজের কথা ভাবা হয়েছিল বলে মন্ত্রী জানান।
পরে মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা খালধারের পাশের জমি ব্যবহারের অনুমতি দেন। স্থানীয় কাউন্সিলর তৃণমূলের রত্না শূর বলেন, “স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ অনেক বারই এই বিষয়টি নিয়ে জানিয়েছেন। এই ব্যাপারে সেচ দফতরে অনুরোধ করে চিঠি দিয়েছিলাম। অবশেষে সমাধান সূত্র মিলল।”