দক্ষিণেশ্বরে বসানো হবে প্রতিষ্ঠাত্রীর মূর্তি

কার্জন পার্কের পরে দক্ষিণেশ্বর। স্কাইওয়াকের সঙ্গেই চার রাস্তার মোড়ে বসছে রানি রাসমণির ব্রোঞ্জের মূর্তি।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৩০
Share:

ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে মাটির মূর্তিটি। নিজস্ব চিত্র

কার্জন পার্কের পরে দক্ষিণেশ্বর। স্কাইওয়াকের সঙ্গেই চার রাস্তার মোড়ে বসছে রানি রাসমণির ব্রোঞ্জের মূর্তি।

Advertisement

দক্ষিণেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষের আবেদনে সেখানে প্রবেশের রাস্তায় যানজট কমাতে স্কাইওয়াক তৈরির পরিকল্পনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই প্রকল্পকে কেন্দ্র করে আশপাশের সৌন্দর্যায়নের বিষয় নিয়ে আলোচনার সময়েই রাজ্য সরকার দক্ষিণেশ্বর আইল্যান্ডে মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা রানি রাসমণির মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথমে ঠিক হয়, তিন ফুট উচ্চতার মূর্তি বসানো হবে। কিন্তু পরে জায়গার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে তা চার ফুট করা হয়।

রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘রানি রাসমণি বাংলার গর্ব। তিনি যেমন দক্ষিণেশ্বর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছেন তেমনই আবার জেলেদের উপরে জলকর বসানোর প্রতিবাদে গঙ্গায় ব্রিটিশদের জাহাজ চলাচলও আটকে দিয়েছিলেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত মন্দির আজ আন্তর্জাতিক দর্শনীয় স্থান। তাই তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতেই মূর্তি বসানো হচ্ছে।’’

Advertisement

প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রায় পনেরো বছর আগে দক্ষিণেশ্বরে রানি রাসমণি মন্দিরে শ্বেত পাথরের তৈরি তাঁর একটি মর্মর মূর্তি বসানো হয়। আবার কার্জন পার্কের পুরনো শ্বেত পাথরের মূর্তিটি ভেঙে যাওয়ায় ২০১২ সালে মন্দির কর্তৃপক্ষ সেটি সরিয়ে প্রায় সাত ফুট উচ্চতার একটি ব্রোঞ্জের মূর্তি বসান। তার উদ্বোধনে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্জন পার্কের ভিতরে ওই অংশের নাম দেন, ‘রানি রাসমণি উদ্যান’। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী জানান, মন্দির ও কার্জন পার্কের মূর্তি যিনি বানিয়েছেন, কৃষ্ণনগরের সেই ভাস্কর গৌতম পালই এ বারের মূর্তিটিও তৈরি করছেন।

গৌতমবাবু জানান, কার্জন পার্কের মূর্তিটির মুখে বয়সের ছাপ রয়েছে। দেখলে মনে হবে বয়স্কা রানি রাসমণি গভীর চিন্তায় মগ্ন। তবে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে ঢোকার মুখে যে মূর্তিটি বসবে তাতে তিনি মধ্যবয়সের। মন্দির তৈরির চিন্তায় তিনি মগ্ন হয়ে বসে রয়েছেন, এমন ধাঁচেই হচ্ছে চার ফুটের মূর্তিটি। গৌতম বলেন, ‘‘কুশলবাবুর থেকে বেশ কয়েকটি ছবি পেয়েছিলাম, তা থেকেই একটিকে বেছে নিয়ে এই মূর্তি বানাচ্ছি।’’ তিনি জানান, প্রথমে মাটি দিয়ে তৈরি করতে হয়েছে মূর্তি। তার উপরে প্লাস্টার অব প্যারিস দিয়ে ছাঁচ তৈরি করে তা ব্যবহার করে ফাইবারের মূর্তি বানানো হয়েছে। এ বার তাতে মোম ঢেলে তৈরি হবে মোমের মূর্তি। গৌতম জানান, এর পরের ধাপে মোমের মূর্তির উপরে সুরকি, প্লাস্টার জমিয়ে ছাঁচ তৈরি করা হবে। কয়েক দিন পরে সেই ছাঁচকে আগুনে পুড়িয়ে শুকনো করা হবে। তার পরে তাতে ব্রোঞ্জ গলিয়ে ঢালা হবে।

দক্ষিণেশ্বর স্টেশনের সামনে চার রাস্তার মোড়ে গোলাকৃতি আইল্যান্ডটি ভেঙে আগের থেকে ছোট আকারের বানানো হয়েছে। তার মাঝে বসছে ব্রোঞ্জের মূর্তিটি। রেল স্টেশনের দিকে মুখ করে থাকবেন রানি রাসমণি। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা জানান, মূর্তি বসানোর পাশাপাশি ওই আইল্যান্ডটিও বাহারি আলো, গাছ দিয়ে সাজানো হবে। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি ভাষায় রানি রাসমণির জন্ম, মৃত্যু ও জীবন সম্পর্কে লেখা থাকবে। কুশলবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর পরিকল্পনা মতো প্রবেশপথের মুখেই দর্শনার্থী ও পর্যটকেরা মন্দিরের প্রতিষ্ঠাত্রীকে দেখতে পাবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন