ক্লাস চলছিল রোজকার মতোই। চলছিল পরীক্ষাও। হঠাৎই গ্যাসের গন্ধে খালি করতে হল স্কুল। আতঙ্ক-উদ্বেগ-হুড়োহুড়ির মধ্যে নীচে নেমে এল পড়ুয়ারা। ঘোষণা হল ছুটিরও। বৃহস্পতিবার সকাল সওয়া এগারোটা নাগাদ পার্ক স্ট্রিটের হ্যারো হল স্কুলের এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায়।
পুলিশ জানায়, স্কুল কর্তৃপক্ষের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থল, পার্ক স্ট্রিটের কারনানি ম্যানশন চত্বরে পৌঁছে যান তাঁরা। পৌঁছয় দমকলের ইঞ্জিনও। তবে কয়েক ঘণ্টা ধরে সারা স্কুলবাড়ি ভাল করে খুঁজে গ্যাসের উৎস পাওয়া যায়নি বলেই জানিয়েছেন দমকলকর্মীরা।
স্কুলে পৌঁছে দেখা গেল, তখনও সকলের চোখ-মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। এই ম্যানশনের ২৭-বি নম্বর বহুতলের তিনতলা ও চারতলায় চলে আইসিএসই বোর্ডের স্কুলটি। এ দিন বেলা এগারোটা দশ নাগাদ তিনতলায় শিক্ষিকারা হঠাৎ গ্যাসের গন্ধ পান। কোথাও পাইপ লিক করে গ্যাস ছড়াচ্ছে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয় আতঙ্ক।
২০০৭-এর অগস্টে ওই এলাকারই একটি বহুজাতিক রেস্তোরাঁয় গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয়েছিল এক জনের। সেই আতঙ্কের রেশ এখনও আছে। কর্তৃপক্ষ জানান, স্কুলের আশপাশ ঘিরে প্রচুর রেস্তোরাঁ রয়েছে। এমনকী যে বহুতলে স্কুল, তার নীচেও রেস্তোরাঁ আছে। তাই গ্যাসের গন্ধ পেয়েই তাড়াতাড়ি স্কুল খালি করা হয়। স্কুলের সহ-অধ্যক্ষ নাতাশা বাজাজ বলেন, ‘‘গন্ধটা স্টাফরুম থেকে করিডরেও ছড়িয়ে পড়ছিল। কিন্তু বুঝতে পারছিলাম না, কোথা থেকে আসছে।’’
এ দিকে, হঠাৎ স্কুল থেকে বেরিয়ে নীচে যাওয়ার নির্দেশ পেলে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। ছড়িয়ে পড়ে আগুনের গুজবও। তত ক্ষণে গ্যাসের গন্ধ পেয়ে ভয় পেয়ে ক্লাসরুমে ব্যাগ রেখেই বেরিয়ে যায় সবাই। নবম শ্রেণির ছাত্র অভয় গুপ্ত বলে, ‘‘চারতলার ক্লাস ঘরে পরীক্ষা দিচ্ছিলাম আমরা। হঠাৎই রবিন দাদা (স্কুলের অশিক্ষক কর্মী) এসে বললেন, গ্যাস লিক করছে। আগুন লাগতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে সিঁড়ি দিয়ে নামতে শুরু করি। ব্যাগগুলোও নেওয়ার সময় পাইনি।’’