নারী-পাচার চক্রে ধৃত ৫, উদ্ধার কিশোরী

এক-দু’জন নয়। অভিযোগ, আট-ন’জন মিলে রাতের পর রাত ধর্ষণ করত তাকে। আর তাতে মদত দিত দলেরই এক মহিলা। সেই মহিলাই দলের অন্যতম পাণ্ডা! উত্তরপ্রদেশের বিজনৌর থেকে উদ্ধার হওয়া কলকাতার বাগুইআটি এলাকার বাসিন্দা বছর ষোলোর কিশোরীর চেহারা দেখে এবং পরে তার মুখ থেকে শোনা বিবরণে শিউরে উঠেছিলেন এ রাজ্যের সিআইডি-র অ্যান্টি হিউম্যান ট্র্যাফিকিং ইউনিটের আধিকারিকেরা।

Advertisement

দীক্ষা ভুঁইয়া

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৫ ০০:৩৪
Share:

এক-দু’জন নয়। অভিযোগ, আট-ন’জন মিলে রাতের পর রাত ধর্ষণ করত তাকে। আর তাতে মদত দিত দলেরই এক মহিলা। সেই মহিলাই দলের অন্যতম পাণ্ডা! উত্তরপ্রদেশের বিজনৌর থেকে উদ্ধার হওয়া কলকাতার বাগুইআটি এলাকার বাসিন্দা বছর ষোলোর কিশোরীর চেহারা দেখে এবং পরে তার মুখ থেকে শোনা বিবরণে শিউরে উঠেছিলেন এ রাজ্যের সিআইডি-র অ্যান্টি হিউম্যান ট্র্যাফিকিং ইউনিটের আধিকারিকেরা।

Advertisement

পরে উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড পুলিশের পাশাপাশি দিল্লির এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহায়তায় জালে ধরা পড়ল আন্তঃরাজ্য পাচার চক্রের এক মহিলা পাণ্ডা-সহ পাঁচ দালাল। তবে আর এক পাণ্ডার খোঁজ চলছে।

সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ষোলোর ওই কিশোরী পড়শি এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু বাড়ির মত না থাকায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে যুবকের সঙ্গে সে পালিয়ে যায়। স্থানীয় থানা, এমনকী সিআইডিতেও নিখোঁজ ডায়েরি হয়। আচমকা তিন মাসের মাথায় মায়ের মোবাইলে ফোন করে ওই কিশোরী। কিন্তু একটু পরেই ফোন কেটে যায়। কিন্তু ওইটুকু কথাই আলো দেখায় তদন্তকারীদের। মোবাইলের সূত্র ধরে মেয়েটির খোঁজ মেলে বিজনৌরে। সেখান থেকেই সোমবার গ্রেফতার করা হয় পাচার চক্রের পাণ্ডা
চিত্রা শর্মাকে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, বিজনৌরের বাসিন্দা হলেও চিত্রার যোগাযোগ ছিল দেশের বিভিন্ন প্রান্তের দালালদের সঙ্গে। এ ভাবেই নাবালিকাদের বিয়ের টোপ দিয়ে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিয়ে এসে বিক্রি করা হত বলে প্রাথমিক তদন্তে জেনেছেন গোয়েন্দারা। এই চক্রে চিত্রার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয় তার ছেলে শুভম শর্মাও। এ ছাড়াও বিষম শর্মা, কমল শর্মা এবং সুশীল শর্মা নামের তিন অপরাধীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

উদ্ধারের পরে মেয়েটি তদন্তকারী দলকে জানায়, ওই যুবক কলকাতা থেকে তাকে প্রথমে ঝাড়খণ্ডের পালামৌতে নিয়ে যায়। সেখানে তারা বিয়েও করে। কিন্তু পরে সেই ‘স্বামী’ দেহরাদূনে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে তাকে তুলে দেয় অন্য এক জনের হাতে। সেখান থেকে বিজনৌরে। কিশোরীর দাবি, অনেক বার হাত বদল হলেও, তাকে যৌন ব্যবসায় নামায়নি এই চক্রটি। উল্টে চক্রের লোকজনই দিনের পর দিন তাকে ধর্ষণ করত। মেয়েটি গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, সবই হত চিত্রার নির্দেশে। তবে চিত্রার সঙ্গে বিহারী নামের আর একটি লোক ছিল। সে পলাতক বলে জানিয়েছে সিআইডি।

সিআইডি-র অ্যান্টি হিউম্যান ট্র্যাফিকিং ইউনিটের আধিকারিক শর্বরী ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, বিয়ের টোপ দিয়ে মেয়ে পাচারের ঘটনা আগেও একাধিক এসেছে। কিন্তু একটি চক্রের এত লোককে এক সঙ্গে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন