সার্ভে পার্কের ক্লাব চত্বরে উদ্ধার কিশোরীর দেহ

বালুরঘাটের মেয়ে কলকাতায় এসেছিল পড়াশোনার জন্য। হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট কোর্স-এর অঙ্গ হিসেবে কলকাতার সার্ভে পার্কের একটি অভিজাত ক্লাবে শিক্ষানবিশী করছিল মাস দুয়েক ধরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৫০
Share:

পূর্ণিমা দেবনাথ।

বালুরঘাটের মেয়ে কলকাতায় এসেছিল পড়াশোনার জন্য। হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট কোর্স-এর অঙ্গ হিসেবে কলকাতার সার্ভে পার্কের একটি অভিজাত ক্লাবে শিক্ষানবিশী করছিল মাস দুয়েক ধরে। বাকি ছিল আরও তিন মাস। তার আগেই পূর্ণিমা দেবনাথ (১৭) নামে ওই কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ রবিবার দুপুরে ক্লাবেরই স্টাফ কোয়ার্টার্স থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সকাল থেকে ওই ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। দুপুরে দরজা ভেঙে ঢুকে কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ মেলে।

Advertisement

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, এটি আত্মহত্যার ঘটনা। সোমবার ময়না-তদন্ত করার পরে প্রাথমিক রিপোর্টেও তেমন ইঙ্গিত মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। অস্বাভাবিক মৃত্যুর একটি মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে সার্ভে পার্ক থানার পুলিশ। পূর্ণিমার একটি ডায়েরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার থেকে কোনও সূত্র মেলে কিনা,খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

ওই ক্লাবের সচিব সঞ্জীব ঘোষ বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক ও দুঃখজনক ঘটনা। কেন এমন হল, সেটা আমরা বুঝতে পারছি না।’’ সঞ্জীববাবু জানান, শিক্ষানবিশ হিসেবে ওই কিশোরী মাসে মাসে স্টাইপেন্ড পেত, নিয়ম ও শর্ত মতো তাকে ওই টাকা দিত একটি বেসরকারি সংস্থা।

Advertisement

বালুরঘাটের আইটিআই কলেজের ছাত্রী পূর্ণিমার বাবা প্রকাশ দেবনাথ পেশায় দিনমজুর। বালুরঘাটের ফরিদপুর তল্লাটে তাঁদের বাড়ি। গত শনিবার, ৩১ ডিসেম্বরও বাবা-মাকে ফোন করেছিল পূর্ণিমা। সেটাই শেষ বার। তখন মেয়ের কথায় কোনও অস্বাভাবিকতা পাননি বলে জানাচ্ছেন পূর্ণিমার বাড়ির লোকজন।

তদন্তকারীদের একাংশের বক্তব্য, কিছু সম্পর্কের টানাপড়েনের জন্যই এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তদন্ত আরও না এগোলে বিষয়টি পুরোপুরি জানা যাবে না। মৃতা কিশোরীর মা তনিশা দেবনাথের অভিযোগ, কলকাতার ওই অভিজাত ক্লাবেরই এক কর্মী কিছু দিন আগে তাঁর মেয়েকে জোর করে সিঁদুর পরিয়ে দিয়েছিলেন। সেই ঘটনার সঙ্গে পূর্ণিমার মৃত্যুর যোগ থাকতে পারে। অবশ্য এই ব্যাপারে কলকাতা বা বালুরঘাট, কোথাও পুলিশকে কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি। ক্লাবের তরফে সঞ্জীববাবুও জানাচ্ছেন, সিঁদুর পরানোর ঘটনা তাঁদের গোচরে আসেনি। তবে
ক্লাব সচিবের দাবি, ‘‘যে কর্মী সম্পর্কে বলা হচ্ছে, তাঁকে আর পূর্ণিমাকে এক সঙ্গে ৩১ ডিসেম্বর রাতে হোটেলের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল। তাঁদের আচরণও ছিল স্বাভাবিক।’’

তদন্তকারীদের দাবি, শনিবার সন্ধ্যায় ক্লাব কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ঘণ্টা দুয়েকের জন্য ক্লাবের বাইরেও বেরিয়েছিল পূর্ণিমা। আরও কোথাও কারও কারও সঙ্গে মেয়েটির ঘনিষ্ঠতা ছিল কি না, বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে সে সম্পর্কেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে মৃতার পরিবারের তরফে ওই ধরনের কোনও খবরের সত্যতা স্বীকার করা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন