এ ভাবেই যন্ত্রের মধ্যে লুকনো ছিল সোনা। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
চোরাই সোনা উদ্ধার করতে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে কাছের কারখানায় ছুটলেন কলকাতার শুল্ক অফিসারেরা। বিদেশ থেকে আনা যন্ত্রাংশ গলিয়ে ফেলতেই তার ভিতর থেকে বেরিয়ে এল ৩ কিলোগ্রাম সোনার তাল। সেই সোনার তালের উপরে ইস্পাত ঢালাই করে যন্ত্রাংশ বানানো হয়েছিল। এই ‘শিল্পকর্ম’ দেখে চোখ ছানাবড়া শুল্ক অফিসারদের।
মঙ্গলবার সকালে কলকাতা বিমানবন্দরে ওই সোনা-সহ রতন সিংহ নামে দমদমের এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হওয়া সোনার বাজারদর ৯০ লক্ষ টাকা। রতন এক বেসরকারি সংস্থার হয়ে কলকাতা বিমানবন্দরেই এসি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেন। শুল্ক দফতর জানায়, এ দিন সকাল আটটা নাগাদ দুবাই থেকে এমিরেটস-এর উড়ানে কলকাতায় নামার পরে একা রতনকে বেরোতে দেখে সন্দেহ হয় শুল্ক অফিসারের। গত শনিবারেই দুবাই গিয়ে মঙ্গলবার সকালেই তিনি ফেরায় সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। কিন্তু, তল্লাশি চালিয়ে তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি। যন্ত্রটি বায়ুচাপে চলে। সেটি দিয়ে গাড়ির চাকার নাট খোলা যায়। যন্ত্রের গায়ে লেখা ওজন ছিল ৭.৬ কিলো। কিন্তু বিমানবন্দরের ওজন যন্ত্র দেখায়, সেটির আসল ওজন প্রায় ১০ কেজি।
স্ক্রু-ড্রাইভার ও রেঞ্জ দিয়ে সেই যন্ত্রটি খুলে ফেলার পরেও ভিতরে সোনা পাওয়া যায়নি। ইস্পাত দিয়ে তৈরি ভিতরের একটি যন্ত্রাংশ দেখে সন্দেহ বাড়ে শুল্ক অফিসারদের। শেষে পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করা এক অফিসার ওই যন্ত্রাংশের পরিধি ও উচ্চতা নিয়ে অঙ্ক কষতে বসেন। তিনি দেখেন, যন্ত্রাংশের ওজন হওয়ার কথা ২.২ কিলোগ্রাম। কিন্তু, ওজন নিয়ে দেখা যায় সেটি প্রায় সাড়ে চার কেজির। অথচ ইস্পাত দিয়ে মোড়া সেই যন্ত্রাংশ খোলার উপায় নেই। একেবারে নিরেট।
সমস্যা সমাধানে নিরেট যন্ত্রাংশ নিয়েই শুল্ক অফিসারেরা ছোটেন বিমানবন্দরের কাছে দুর্গানগরে একটি কারখানায়। সেটি ফারনেসে গলিয়ে ভিতরে সোনা উদ্ধার হয়। চোরাই সোনার আসল প্রাপকের খোঁজ চলছে।