চার সেতুতে নিষিদ্ধ হল মালবাহী গাড়ি

লালবাজার জানিয়েছে, মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পর থেকেই অভিযোগ উঠেছে শহরের বিভিন্ন সেতু ও উড়ালপুলের দুরবস্থা নিয়ে। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থার তরফে সেতু ও উড়ালপুলগুলি পরীক্ষাও করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:১৮
Share:

নিষিদ্ধ। ফাইল চিত্র।

কলকাতার চারটি সেতুতে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করল কলকাতা পুলিশ। শনিবার নবান্নে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, ‘‘অরবিন্দ সেতু, বিজন সেতু, বেলগাছিয়া সেতু এবং টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের সেতু দিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। সেতুগুলির অবস্থা দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, পণ্যবাহী গাড়ি ওই সেতুগুলির পরিবর্তে চারটি বিকল্প সেতু দিয়ে পাঠানো হবে।

Advertisement

লালবাজার জানিয়েছে, মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পর থেকেই অভিযোগ উঠেছে শহরের বিভিন্ন সেতু ও উড়ালপুলের দুরবস্থা নিয়ে। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থার তরফে সেতু ও উড়ালপুলগুলি পরীক্ষাও করা হয়েছে। তার পরেই লালবাজার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শহরের চার প্রান্তের চারটি সেতুর ‘ফিটনেস সার্টিফিকেট’ না মেলা পর্যন্ত কোনও পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করবে না। পুলিশের এক কর্তার মতে, ‘‘মাঝেরহাটের ঘটনায় আমরা একটু বেশিই সতর্ক হয়ে গিয়েছি।’’

ওই সেতু ভাঙার চার দিন পরে শনিবার সকাল থেকে কিছুটা হলেও যানজট থেকে মুক্ত হয়েছে বন্দর ও দক্ষিণ কলকাতার একাংশ। পুলিশ সূত্রের দাবি, শুক্রবার রাত থেকে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের উপরে রাশ কিছুটা আলগা করা হয়েছে। তার ফলে বন্দর এলাকায় হাইড রোড-সহ মূল রাস্তাগুলিতে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের সংখ্যা কমেছে। তাতেই কমেছে যানজট। শনিবার সারা দিনই বন্দরে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করেছে। পুলিশ জানায়, আজও ওই ব্যবস্থা বজায় থাকবে।

Advertisement

পণ্যবাহী গাড়ির বিকল্প পথ
আগে এখন
• বেলগাছিয়া সেতু রাজা মণীন্দ্র রোড
• অরবিন্দ সেতু মানিকতলা সেতু/বাগমারি
• বিজন সেতু প্রিন্স আনোয়ার শাহ কানেক্টর-জীবনানন্দ সেতু
• টালিগঞ্জ সেতু দুর্গাপুর সেতু-রাসবিহারী অ্যাভিনিউ
সূত্র: কলকাতা পুলিশ

কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (১) বিনীত গোয়েল জানান, বন্দর এলাকায় আগের মতোই বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টে ও রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করবে। এই পরিস্থিতিতে পণ্যবাহী গা়ড়ির উপরে নতুন নিষেধাজ্ঞা ফের রাতের শহরে যানজট তৈরি করবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পুলিশেরই একাংশ। ওই সূত্রের মতে, মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে সব চেয়ে বেশি চাপ পড়েছে দুর্গাপুর সেতুর উপরে। গত কয়েক দিন ধরে ওই সেতুর দু’পাশের রাস্তা দীর্ঘ যানজটের কবলে পড়ছে। এ বার টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের পণ্যবাহী গাড়িকে ওই রাস্তা দিয়ে পাঠালে রাতের দিকেও দুর্গাপুর ব্রিজের পরিস্থিতি ঘোরালো হতে পারে।

বস্তুত, রাতে আটকে থাকা গাড়ির জটও যে শহরকে নাকাল করতে পারে, তা দেখা গিয়েছিল বৃহস্পতিবার সকালে। বুধবার রাত থেকে বিধিনিষেধ চালু হওয়ায় পণ্যবাহী গাড়ির জন্য থমকে গিয়েছিল বিদ্যাসাগর সেতুর কলকাতামুখী রাস্তা। প্রভাব প়ড়েছিল কলকাতা ও হাওড়ায়। লালবাজার সূত্রে খবর, এর পরেই পণ্যবাহী গাড়ির নিয়ন্ত্রণ আলগা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পুলিশকর্তারা। তবে পুলিশ কমিশনার এ দিন জানান, যানজট কাটাতে আরও বিকল্প রাস্তার সন্ধান চলছে। রাস্তা সারাই শুরু হবে। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে ২০ চাকার গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কোন সেতু কতটা ভার নিতে পারবে, তা খতিয়ে দেখার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘কেউ কেউ বলছেন, ২০ চাকার গাড়ি ঢুকতে না দেওয়ায় পচনশীল জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে। এটা ঠিক নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন