পোষ্য কুকুরদের জন্য এ বার মিলবে সরকারি ক্রেশ। প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের বেলগাছিয়া ক্যাম্পাসে শুরু হতে চলেছে সেই ব্যবস্থা।
সপরিবার বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে পোষা কুকুরটিকে কোথাও রেখে যাওয়া নিয়ে ঘোর চিন্তায় থাকেন গৃহকর্তা। যদিও শহরে বেসরকারি ভাবে কুকুরদের রাখার ক্রেশ তৈরি হয়েছে আগেই। কিন্তু মাঝেমধ্যেই সেগুলির পরিষেবা নিয়ে বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ ওঠে।
বেলগাছিয়ার ক্যাম্পাসে ৫০টি আসন নিয়ে তৈরি হচ্ছে এই ‘ডগ ক্রেশ’। প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, পঞ্চাশটি আসনের মধ্যে কুড়িটি আসনে বাতানুকূল ব্যবস্থা থাকছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আছে এমন জায়গায় অনেকেই পোষ্যটিকে রাখতে চান। সে কথা ভেবেই এই ব্যবস্থা। ক্রেশ তৈরির জন্য প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে বরাদ্দ করা হয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত এই ক্রেশ রাজ্যে প্রথম বলে দাবি করছেন প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকেরা।
পশু চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ব্রাউন টিক (রিফিসেফালাস) নামে এক ধরনের পোকা কুকুরের প্রধান শত্রু। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ওই পোকা কুকুরের দেহে বাসা করে রক্ত খেয়ে নেয়। ফলে অকালেই মারা যায় কুকুর। এমন পোকা যাতে ক্রেশে না ঢুকতে পারে, সে জন্য সংরক্ষিত করা হবে সেই এলাকা। প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক শৈবাল চট্টেপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘কুকুর যেখানে চলাফেরা করবে, খেলবে সেখানে বালির বিছানা থাকবে। কারণ বালি গরম হওয়ায় কুকুরের দেহে ওই পোকা ঢুকতে পারবে না। ক্রেশের চারদিক নিকাশি নালা দিয়ে ঘেরা থাকবে। ঘাতক ব্রাউন টিক যাতে ঢুকতে না পারে সে জন্য বিশেষ রাসায়নিক পদার্থ ছড়ানো হবে ওই নিকাশি নালায়।’’ ক্রেশে সর্ব ক্ষণের জন্য থাকবেন পশু চিকিৎসক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পূর্ণেন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে তৈরি করা হচ্ছে ক্রেশটি। উন্নত পরিষেবার পাশাপাশি বেসরকারি ক্রেশের তুলনায় অর্ধেক দামে পোষ্য কুকুরকে রাখতে পারবেন গৃহস্থেরা। এপ্রিল থেকেই চালু হবে এটি।’’
বিধায়ক তথা পশুপ্রেমী দেবশ্রী রায় বলেন, ‘‘সরকারি স্তরে কুকুরদের রাখার জন্য ক্রেশ তৈরি হলে নিঃসন্দেহে উন্নত মানের পরিষেবা মিলবে এমনটা আশা করা যায়। পাশাপাশি এটাও চাই, যাতে রাস্তার অসুস্থ কুকুরদের সেবায় বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে আসে।’’ উপাচার্যের কথায়, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে ক্রেশ তৈরি করার জন্য পশুপ্রেমীরা আমাদের কাছে দরবার করছিলেন। তাঁদের কথা ভেবেই এই উদ্যোগ। প্রকল্পটি চালু হলে বিশ্ববিদ্যালয় আর্থিক ভাবেও সমৃদ্ধ হবে।’’