ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো।—ফাইল চিত্র।
পরিকল্পনায় যত জটই থাক, পরিবেশের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ থাকবে ইস্ট-ওয়েস্টের!
কর্তৃপক্ষের দাবি, ট্রেনের কামরা থেকে স্টেশন, কারশেড, এমনকী গঙ্গার নীচে সুড়ঙ্গ — ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর গোটাটাই পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। মেট্রো সূত্রে খবর, ইস্ট-ওয়েস্টের জন্য মাটির উপরের ৬টি স্টেশন ভবনে আলো জ্বলবে সৌরশক্তিতে। ডিপো এবং কারশেডের বেশির ভাগ আলোও এ ভাবে জ্বলবে। স্টেশন ও কারশেডের ছাদ হচ্ছে ‘পলিকার্বন শিট’ দিয়ে। যাতে দিনের বেলায় সহজেই আলো প্রবেশ করতে পারে। রাতে যেটুকু আলো-পাখার প্রয়োজন হবে, তার জন্য ব্যবহার হবে সৌর বিদ্যুৎ ও এলইডি আলো। বিভিন্ন স্টেশন এবং কারশেডের ছাদে বসানো হচ্ছে সৌর প্যানেল। শুধু তা-ই নয়, যে ৬টি স্টেশন মাটির নীচে তৈরি হচ্ছে, সেগুলির স্থাপত্য সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব। ইতিমধ্যে ইন্ডিয়ান গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে সেগুলির নকশা।
মেট্রো সূত্রে খবর, প্রচলিত শক্তির খরচ কমানোর জন্য প্রতি স্টেশনে লাগানো হচ্ছে ‘প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর’। প্ল্যাটফর্মে যখন ট্রেন থাকবে না, তখন এই স্বয়ংক্রিয় দরজা বন্ধ থাকবে। ট্রেন এলে তা খুলে যাবে। এতে কাজ হবে দু’রকমের। প্রথমত, বাতানুকূল ব্যবস্থার খরচ কমবে। দ্বিতীয়ত, কলকাতা মেট্রোর মতো ট্রেন আসতে দেখে লাইনে ঝাঁপ দিতে পারবে না কেউ। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তারা জানান, ট্রেনগুলির ‘ব্রেকিং’ ব্যবস্থা এমন ভাবে তৈরি হচ্ছে যাতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়। তাঁদের দাবি, ব্রেক করার পরে বিদ্যুৎ তো নষ্ট হবেই না, উল্টে বিদ্যুৎ ফিরে যাবে তৃতীয় লাইনে।
মেট্রো কর্তাদের দাবি, গঙ্গার নীচে সুড়ঙ্গ তৈরিতে যে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলিও পরিবেশের কোনও ক্ষতি করবে না। ক্ষতি হবে না নদীর জলেরও। পাশাপাশি, যাত্রীদের জন্য ওই সুড়ঙ্গে সর্বক্ষণ বিশুদ্ধ বাতাসের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
রেল বোর্ড সূত্রে খবর, প্রচলিত শক্তির ব্যবহার কমিয়ে রেলকে পরিবেশবান্ধব করে তুলতে বিভিন্ন ভবনের ছাদে ও ফাঁকা জমিতে ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন সৌর বিদ্যুৎ প্লান্ট গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে রেল ১০০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছে। রেলকর্তারা জানান, বিভিন্ন জায়গায় সৌর বিদ্যুতের প্লান্ট গড়ে বিদ্যুৎ দেওয়া হবে জাতীয় গ্রিডে। সেই মতো কলকাতা, অসম, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও অন্ধ্রপ্রদেশে ১৫০ মেগাওয়াট করে সৌর বিদ্যুৎ প্লান্ট গড়া হচ্ছে। এ জন্য ‘সোলার এনার্জি কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া’র সঙ্গে কথাও বলেছে রেলমন্ত্রক।