দক্ষিণদাঁড়িতে রেললাইনের ধারে মিলল দুই বন্ধুর দেহ

বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকায় ভিড় জমে যায়। খবর পৌঁছয় দুই যুবকের বাড়িতে। আসে লেক টাউন থানার পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২০ ০২:০৫
Share:

রেললাইনের ধারে পড়ে স্বপনের দেহ। বুধবার সকালে, দক্ষিণদাঁড়িতে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

বছর শেষের রাতে বন্ধুদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া সেরেই বাড়ি ফিরবেন বলে জানিয়েছিলেন এক যুবক। কিন্তু সারা রাত তিনি না ফেরায় চিন্তায় পড়েন বাড়ির লোকজন। শেষে পরদিন সকালে রেললাইনের ধারে পাওয়া গেল তাঁর মৃতদেহ। তিনি একা নন, কয়েক হাত দূরে মিলেছে আরও এক যুবকের নিথর দেহ। বুধবার সকালে দক্ষিণদাঁড়ি সংলগ্ন ২৪ নম্বর রেলগেটের কাছে লাইনের ধারে ওই জোড়া দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

Advertisement

বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকায় ভিড় জমে যায়। খবর পৌঁছয় দুই যুবকের বাড়িতে। আসে লেক টাউন থানার পুলিশ। পরে দমদম জিআরপি-র কর্মীরা গিয়ে দেহ দু’টি উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠায়। মৃতদের নাম সাজন পাসোয়ান (২৩) এবং স্বপন কর্মকার (২০)। সাজনের পরিবারের অভিযোগ, পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছে তাঁকে। স্বপন ও সাজনের মৃত্যুর কারণ ঘিরে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। এটা খুন না দুর্ঘটনা, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নয় রেল পুলিশ। ময়না-তদন্তের পরেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে বলে মনে করেন তাঁরা। দুই যুবকের পরিবারের তরফে অবশ্য বুধবার রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ করা হয়নি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকালে রেললাইনের ধারে কয়েক হাতের ব্যবধানেই দুই যুবকের দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এক জনের পরনে ছিল জ্যাকেট ও জিনস। অন্য জনের গেঞ্জি ও জিনস। জিআরপি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে কোনও ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে কি না বা তেমন কোনও রিপোর্ট জমা পড়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণদাঁড়িতে থাকতেন সাজন ও স্বপন। দুই বন্ধুই একটি শপিং মলের গাড়ি চালাতেন। সাজনের পরিবারের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ফোনে ওই যুবক জানিয়েছিলেন, তাঁর বন্ধুরা এসেছেন। তাঁদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া সেরেই বাড়ি ফিরবেন তিনি। কিন্তু তার পর থেকে তাঁর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। মা অনিতা পাসোয়ান জানান, তাঁর দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। সাজনের আয়ই ছিল ভরসা। স্বপনের মা দীপা কর্মকার জানান, তাঁর এক ছেলে ও দুই মেয়ে। স্বপনের রোজগারেই সংসার চলত।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, মঙ্গলবার রাতে পাড়ায় পিকনিক ছিল। রাতে সাজনের মোবাইলে একটি ফোন আসে। তার পরেই তিনি স্বপনকে নিয়ে বেরিয়ে যান। সম্প্রতি সাজনের সঙ্গে অন্য এলাকার কয়েক জন যুবকের গোলমাল হয়েছিল বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। সাজনের সঙ্গে প্রথমে তিন জন ও পরে দু’জন রাতে দেখা করতে আসেন বলে জানতে পেরেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু স্বপনের সঙ্গে

কারও কোনও ঝগড়া ছিল না বলেই তাঁদের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন