জয়পুরিয়ার ঘটনা জানেনই না, দাবি করলেন শিক্ষামন্ত্রী

ওই কলেজে বাণিজ্য বিভাগের প্রথম সিমেস্টারে প্রায় ১৩৪ জন পড়ুয়ার উপস্থিতির হার ৬০ শতাংশের নীচে ছিল। কিন্তু অধ্যক্ষ শুধু সান্ধ্য বিভাগের ৩২ জন পড়ুয়াকে পরীক্ষায় বসার বিশেষ অনুমতি দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৭
Share:

উত্তর কলকাতার শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজের চার শিক্ষকের পদত্যাগের ঘটনায় শোরগোল পড়েছে শিক্ষা মহলে। অথচ, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে শনিবার এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, ওই কলেজে বাণিজ্য বিভাগের প্রথম সিমেস্টারে প্রায় ১৩৪ জন পড়ুয়ার উপস্থিতির হার ৬০ শতাংশের নীচে ছিল। কিন্তু অধ্যক্ষ শুধু সান্ধ্য বিভাগের ৩২ জন পড়ুয়াকে পরীক্ষায় বসার বিশেষ অনুমতি দেন। অনিয়ম ও পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে দু’জন শিফ্‌ট ইনচার্জ এবং দুই শিক্ষক পদত্যাগ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে পাশ হওয়া নিয়ম অমান্য করায় ক্ষুব্ধ হন কলেজেরই শিক্ষকেরা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা নিয়েও এ দিন প্রশ্ন উঠে গেল। শনিবার কলেজের এক শিক্ষক জানান, ওই ৩২ জনের মধ্যে ১৮ জন পড়ুয়াকে পরীক্ষায় বসার অনুমতিও দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিছু পড়ুয়াও প্রশ্ন তুলেছেন, যদি ৩২ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়, তা হলে বাকিদের কেন পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না?

কলেজের পরিচালন সমিতির সরকারি প্রতিনিধি, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন স্পষ্ট জানান, কলেজের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি খুশি নন। সুরেন্দ্রনাথ কলেজে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলির অধ্যক্ষদের বার্ষিক সাধারণ সভায় এ দিন মুখোমুখি হন সাংসদ ও শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ অশোক মুখোপাধ্যায়। সুদীপবাবুর সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলতে চান অধ্যক্ষ। যদিও তা সম্ভব হয়নি। জয়পুরিয়া কলেজের ঘটনায় তিনি যে অসন্তুষ্ট, তা বোঝাতে গিয়ে সুদীপবাবু বলেন, ‘‘অধ্যক্ষদের দৈনন্দিন কাজকর্ম তাঁরাই দায়িত্ব নিয়ে পালন করুন। পরিচালন সমিতি সেটা করতে পারে না। আবার জয়পুরিয়ায় যা হয়েছে, সেটাও দেখলাম।’’ পরে ফোনে সুদীপবাবু বলেন, ‘‘আগে হাজিরার এত কড়াকড়ি ছিল না। এখন হয়েছে। বিষয়টি অধ্যক্ষকেই দেখতে হবে। সমিতির উপরে ছাড়লে হবে না। এই ঘটনা একেবারেই কাম্য নয়।’’

Advertisement

অধ্যক্ষ অবশ্য যুক্তি দেন, ‘‘যারা ৫০ শতাংশ দিন আসতে পারে, তারা ৬০ শতাংশ দিনও আসতে পারত। কিন্তু কলেজে গোলমালের জেরে ওদের উপস্থিতির হার কম হয়েছে। তাই ১০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে।’’ এতে বিড়ম্বনায় পড়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি শুনে রেজিস্ট্রার রাজাগোপাল ধরচক্রবর্তী বলেন, ‘‘কলেজের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। কিন্তু পড়ুয়াদের উপস্থিতি যদি ৬০ শতাংশের কম থাকে এবং কলেজই সেটা চিহ্নিত করে, তা হলে কোনও ভাবেই পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয় না। তবে এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন