ভারী গাড়ি রুখতে বসানো হবে হাইট বার

সেতু এবং উড়ালপুলের উপরে ভারী গাড়ির চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে এ বার কিছু জায়গায় হাইট বার লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেএমডিএ। কেএমডিএ-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার (রাস্তা ও সেতু) ভাস্কর মজুমদার বলেন, ‘‘কত ওজনের গাড়ি সর্বোচ্চ কত গতিবেগে যেতে পারবে সে রকম একটি নোটিস কেএমডিএ-র অধীন কয়েকটি সেতুর সামনে লাগানো হবে। হাইট বারও লাগানো হবে।’’

Advertisement

আর্যভট্ট খান ও কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:২০
Share:

সতর্কতা: ভারী গাড়ি আটকাতে উল্টোডাঙা উড়ালপুলে ওঠার মুখে রয়েছে হাইট বার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

বেশির ভাগ সেতুতেই ওঠার মুখে কোথাও লেখা নেই যে সর্বোচ্চ কত ওজন পর্যন্ত গাড়ি ওই সেতুতে উঠতে পারবে। লেখা নেই সর্বোচ্চ কত কিলোমিটার বেগে গাড়ি যেতে পারবে। অভিযোগ, এই সুযোগ নিয়েই কলকাতার বেশির ভাগ সেতুতেই ভারী ট্রাক বা কুড়ি চাকার ট্রাক উঠে পড়ছে।

Advertisement

সেতু এবং উড়ালপুলের উপরে ভারী গাড়ির চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে এ বার কিছু জায়গায় হাইট বার লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেএমডিএ। কেএমডিএ-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার (রাস্তা ও সেতু) ভাস্কর মজুমদার বলেন, ‘‘কত ওজনের গাড়ি সর্বোচ্চ কত গতিবেগে যেতে পারবে সে রকম একটি নোটিস কেএমডিএ-র অধীন কয়েকটি সেতুর সামনে লাগানো হবে। হাইট বারও লাগানো হবে।’’

২০১৩ সালে উল্টোডাঙা উড়ালপুল বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে বেশি ওজনের গাড়ির যাতায়াতকে চিহ্নিত করেছিলেন বিশেষজ্ঞেরা। ওই উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পরে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ঘোষণা করেছিলেন, প্রতিটি সেতুর সামনে কত ওজনের গাড়ি সর্বোচ্চ কত গতিবেগে সেখান দিয়ে যেতে পারবে, সে রকম নির্দেশ লিখে রাখা বাধ্যতামূলক করা হবে। কিন্তু নতুন উদ্বোধন হওয়া কয়েকটি সেতু বাদে বাকিগুলিতে তেমন নির্দেশ পালন করতে দেখা যায়নি।

Advertisement

যেমন, চিংড়িঘাটা উড়ালপুল, কৈখালির কাছে সেতু কিংবা বিজন সেতুর সামনে দেখা গেল, এমন কোনও নির্দেশ লেখা নেই। নেই কোনও হাইট বারও। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ছোট গাড়ি ছাড়া বড় ট্রাকও সেতুতে মাঝেমধ্যে উঠতে দেখা যায়। চিংড়িঘাটা সেতুর সামনে কর্তব্যরত এক পুলিশ অফিসার জানান, এই সেতুর সামনে এক সময়ে হাইট বার ছিল। তা একবার ভেঙে যাওয়ার পরে আর লাগানো হয়নি।

তবে প্রশ্ন উঠেছে, হাইট বার লাগালেই কি সমস্যার সমাধান হবে? উল্টোডাঙা উড়ালপুলের ইস্টার্ন বাইপাস থেকে ভিআইপি রোডমুখী রাস্তায় হাইট বার লাগানো সত্ত্বেও মাঝেমধ্যেই দেখা যায়, তা ভেঙে গিয়েছে। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, রাতের অন্ধকারে পুলিশি নজরদারির অভাবে বড় ট্রাক বুঝতে না পেরে ওই সেতুতে উঠতে গিয়েই এই বিপত্তি বারবার হচ্ছে। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তার অবশ্য দাবি, ‘‘এখন বেশির ভাগ সেতুতেই রাতে গাড়ির ওঠানামা বন্ধ থাকে। ফলে রাতের অন্ধকারে ট্রাক উঠে পড়ার আর কোনও সুযোগ নেই।’’

কেএমডিএ এলাকার পাশাপাশি পাঁচ নম্বর সেক্টর ও নিউ টাউনের উড়ালপুলগুলি নিয়ে ইতিমধ্যেই বৈঠক করা হয়েছে। হিডকো-নবদিগন্তের চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে উড়ালপুলের রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে সুরক্ষার বিষয়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।

হিডকো সূত্রের খবর, উড়ালপুলের সুরক্ষার স্বার্থে কয়েকটি পদক্ষেপ করার পরিকল্পনা হয়েছে। যেমন, উড়ালপুল কারা দেখভাল করছেন তা লিখে রাখা হবে। পাশাপাশি উড়ালপুলের বহন ক্ষমতা অনুসারে গাড়ি এবং কত ওজন পর্যন্ত সামগ্রী নিয়ে গাড়ি উড়ালপুলে চলতে পারবে, তা নির্দিষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই অনুসারে যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তবে হিডকো সূত্রের খবর, নিউ টাউন এলাকার বেশ কিছু উড়ালপুলে হাইট বার বসানো যাবে না, কারণ তাতে বাস আটকে যাবে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে নিয়মিত উড়ালপুলের দেখভাল করার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।

এ ছাড়াও উড়ালপুলের বহন ক্ষমতা অনুসারে কত সংখ্যক যান চলাচল করতে পারে তা জানতে প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়ার বিষয়েও আলোচনা করছে হি়ডকো-নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন