লুকোনো সার্জে ভোগান্তি

অয়ন চক্রবর্তী চাঁদনি চকের অফিস থেকে সায়েন্স সিটি গেলেন উবের-এ। ভাড়া ১১৭ টাকা। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে কাজ সেরে ফের অফিসে ফেরার জন্য উবের ডাকলেন।

Advertisement

অত্রি মিত্র

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৭ ০১:২৪
Share:

অয়ন চক্রবর্তী চাঁদনি চকের অফিস থেকে সায়েন্স সিটি গেলেন উবের-এ। ভাড়া ১১৭ টাকা। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে কাজ সেরে ফের অফিসে ফেরার জন্য উবের ডাকলেন। তখন ভাড়া উঠল ১৭০ টাকা! একই দূরত্বে দু’রকম ভাড়া। অথচ, ‘সার্জ প্রাইসিং’-ও দেখাল না। আগে তবু কত টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে, তা দেখানো হত। এখন সেটাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

শুধু অয়ন নন, গত কয়েক মাস ধরে এমন অভিজ্ঞতা হচ্ছে অ্যাপ ক্যাবের অসংখ্য যাত্রীর। অথচ, এ নিয়ে কোনও ব্যবস্থাও নিচ্ছে না সরকার। কিন্তু কেন?

পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, এই সংক্রান্ত অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়ার পরে গত বছরের ডিসেম্বরে দিল্লি হাইকোর্ট ‘সার্জ প্রাইসিং’-এর উপরে লাগাম টানার নির্দেশ দিয়ে কেন্দ্রীয় ভূতল ও সড়ক পরিবহণ দফতরকে জাতীয় ট্যাক্সি-নীতি তৈরির নির্দেশ পাঠায়। এর পরেই রাজ্যে রাজ্যে নীতি গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় খসড়া পাঠায় কেন্দ্র। সেখানে যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি বলা হয়েছে, অ্যাপ-ক্যাবের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন ভাড়া ঠিক করবে সরকার। সর্বোচ্চ ভাড়া সর্বনিম্নের তিন গুণের বেশি হবে না। অর্থাৎ, সর্বনিম্ন ভাড়া ১০০ টাকা হলে সর্বোচ্চ ভাড়া ৩০০ টাকার বেশি করা যাবে না। অর্থাৎ, ব্যস্ত সময়ে ভাড়া বাড়লেও তা কখনও তিন গুণের বেশি করা যাবে না।

Advertisement

এর পরেই নড়েচড়ে বসে ওলা ও উবেরের মতো অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলি। আদালতের জটিলতা এড়াতে তারা অ্যাপ-এ ‘সার্জ প্রাইসিং’ কতটা, সেই হিসেব দেখানোই বন্ধ করে দিয়েছে। কত ভাড়া, শুধুমাত্র সেটাই দেখানো হচ্ছে। এতে সমস্যা কমার বদলে বেড়েছে কয়েক গুণ। অথচ, এ নিয়ে সরকারের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: জলসঙ্কট, তবু জলেই যাচ্ছে জল

কেন নেই?

রাজ্য পরিবহণ দফতরের কর্তাদের একাংশ বলছেন, ‘‘থাকবেই বা কী করে? গত কয়েক মাসে ওলা-উবেরের প্রচুর গাড়ি রাস্তায় নেমেছে। বহু বেকার যুবক সেই ট্যাক্সি চালিয়ে উপার্জন করছেন। এই অবস্থায় বেশি কড়াকড়ি করলে ওলা-উবের ব্যবসা গুটিয়ে চলে যাবে। তাতে মুশকিলে প়ড়তে হবে। এ সব সাত-পাঁচ ভেবেই আর কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’’

ওলা, উবের অবশ্য সার্জ প্রাইসিং-এর জন্য পরোক্ষে সরকারকেই দায়ী করছে। ওই দুই সংস্থার কর্তারা বলছেন, ‘‘ইচ্ছেমতো ভাড়া চাওয়া হয় না। গাড়ির চাহিদা এবং জোগানের উপরে ভিত্তি করেই ভাড়া নির্ধারিত হয়। গাড়ির জোগান বাড়লেই ভাড়া কমে যাবে।’’ সরকারি কর্তারা এ বার তাই সার্জ প্রাইসিং বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে গাড়ির জোগান কী করে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন