Nandan

সান্ধ্য শোয়ে ‘সিলসিলা’, ‘সত্যকাম’, ক্ষোভ কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে

চলচ্চিত্রপ্রেমীরা প্রধানত নতুন বিদেশি ছবি এবং কিছু ধ্রুপদী ছবি দেখতে চান। এক সময়ে চলচ্চিত্র উৎসবে সন্ধ্যার শোয়ে পাশাপাশি নন্দনে আন্তর্জাতিক ছবি এবং শিশির মঞ্চে তারকোভস্কি চলত।

Advertisement

ঋজু বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:৫৭
Share:

এক সময়ে চলচ্চিত্র উৎসবে সন্ধ্যার শোয়ে পাশাপাশি নন্দনে আন্তর্জাতিক ছবি এবং শিশির মঞ্চে তারকোভস্কি চলত। —ফাইল ছবি।

বহু কাঠখড় পুড়িয়ে চলচ্চিত্র উৎসবের রোজকার প্রবেশপত্র আদায় করার পরেও মনখারাপ সব্যসাচী করের। সারা দিনের কাজ শেষে উৎসব প্রাঙ্গণে বুধবার সন্ধ্যার শো না-দেখেই ফিরে গেলেন হাই কোর্টে কর্মরত সিনেমাপ্রেমী যুবক।

Advertisement

সময় বার করে জার্মানির ‘গোল্ডেন বেয়ার’জয়ী ‘রাইনগোল্ড’ দেখতে ঢুকেছিলেন। টান-টান কাহিনির রূপকথাধর্মী ছবির দৈর্ঘ্য ১৩৮ মিনিট। এর পরের শোয়ে নন্দনে ভারতীয় ছবি ‘লকড়বগ্গা’, রবীন্দ্র সদনে বাংলা প্যানোরামার ‘উত্তরণ’ এবং শিশির মঞ্চে হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের পুরনো ছবি ‘সত্যকাম’। সব্যসাচীর বক্তব্য, “ভারতীয় বা বাংলা ছবি দেখার সুযোগ তো পরেও মিলবে। হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের পুরনো ছবি বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এখনও ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখায়। এই সব ছবি চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানোয় সমস্যা নেই, কিন্তু সন্ধ্যার শিশির মঞ্চ, রবীন্দ্র সদনে কি অন্য কোনও দুর্লভ আন্তর্জাতিক ছবির শো দেওয়া যেত না!” একই সময়ে রাধা স্টুডিয়োতেও এ দিন ‘সিলসিলা’ দেখানো হয়েছে। তবে নিউ টাউনের নজরুলতীর্থে এ দিনই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দেখানো হয় ২৮তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি, জাফর পানাহির ‘নো বেয়ার্স’। এ ছবি আগে এক দিন নন্দনে বেলা সাড়ে ১১টায় দেখানো হলেও অফিসের জন্য তা দেখতে যেতে পারেননি সব্যসাচী। এ দিন সন্ধ্যায় ছবিটি দেখতে হলে নন্দন চত্বরের আগের শোগুলি দেখা যেত না।

বাম জমানার শেষে কলকাতার এই চলচ্চিত্র উৎসব নানা ধরনের ছবির জন্য দরজা খুলেছে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দুনিয়ার সেরা ছবিগুলিকে আবাহনের পাশাপাশি ইতিহাসের তাৎপর্য মেনে বলিউড বা বাংলার জনপ্রিয় ছবির নির্মাতাদের নানা ছবিও দেখানো হয়। কিন্তু শোয়ের সময় নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। চলচ্চিত্রপ্রেমীরা প্রধানত নতুন বিদেশি ছবি এবং কিছু ধ্রুপদী ছবি দেখতে চান। এক সময়ে চলচ্চিত্র উৎসবে সন্ধ্যার শোয়ে পাশাপাশি নন্দনে আন্তর্জাতিক ছবি এবং শিশির মঞ্চে তারকোভস্কি চলত। এ বারের ক্লাসিক শাখায় গ্রিক পরিচালক মাইকেল কাকোয়ানিসের ছবি ঘিরে অনেকেরই আগ্রহ ছিল। কিন্তু শোগুলি বেশির ভাগই শিশিরে সকালে হয়ে গিয়েছে। এ দিনও সেখানে গ্রিক ট্র্যাজেডির ছায়ায় কাকোয়ানিসের ইফিজেনিয়ার শো ছিল বেলা ১১টায়। বেশি লোক হয়নি। অনেক দর্শকেরই আক্ষেপ, এই ছবিগুলি সন্ধ্যায় দেখানো যেত।

Advertisement

দর্শকদের ক্ষোভ নন্দন-৩-এ তরুণ মজুমদারের হিন্দি ‘বালিকা বধূ’ দেখানো নিয়েও। অনেকেরই বক্তব্য, পুণের আর্কাইভ থেকে মূল বাংলা ‘বালিকা বধূ’ বা ‘সংসার সীমান্তে’র মতো ছবি এ প্রজন্মের কার্যত দেখা হয়নি। কিছু পুরনো ছবির প্রিন্ট পুণেতে সংস্কারও হয়েছে। উৎসব কর্তৃপক্ষ সেই সব পুরনো ছবি দেখানোর চেষ্টা করলেও পারতেন। তবে উৎসবে প্রাপ্তির ভাঁড়ারও মোটে কম নয়। রাষ্ট্রের কোপে বন্দি পানাহি ও তাঁর দেশের নতুন ছবি, ইউরোপ ও অভিবাসীদের গল্পের নানা পরত এই উৎসবও বার বার মেলে ধরেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন